বরিশাল ট্রাফিক: সড়কে জরিমানা আদায়ে নেই পজ মেশিন

বরিশাল ট্রাফিক: সড়কে জরিমানা আদায়ে নেই পজ মেশিন

বরিশাল ট্রাফিক ব্যবস্থায় এখনও শতভাগ ডিজিটালের আওয়াতায় আসেনি। এই মেট্রোপলিটন পুলিশ এলাকায় ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন অ্যান্ড ফাইন পেমেন্ট সিস্টেম (ইটিপিএফএস) এর চালু হয়েছে ২ বছর ১১ মাস আগে। কিন্তু এখনও পুরোপুরি চালু হয়নি কার্ডের মাধ্যমে মামলার টাকা আদায়। চালকের বিরুদ্ধে মামলা দিলে আগের মতোই স্লিপ দেওয়া হয়। পরে নির্ধারিত তারিখে ট্রাফিক বিভাগের অফিসে গিয়ে টাকা জমা দিয়ে জব্দ করা কাগজ নিয়ে আসতে হয়। এতে চালকদের বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হয়। সিতলাখোলা এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ কার্যালয়ের সামনে দেখা যায় মানুষের দীর্ঘ লাইন। অন্যদিকে শুধু মোবাইল ব্যাংকিং ইউক্যাশের মাধ্যমে পরিশোধ করা যাচ্ছে জরিমানার টাকা। এই ম্যানুয়াল ও সনাতন পদ্ধতিতে মামলা দায়ের ও জরিমানা আদায়ের কারণে ট্রাফিক বিভাগের কর্মী ও জরিমানা দাতা-সবাইকে পরতে হয় ভোগান্তিতে। তবে সব ধরনের কার্ড চালু হলে সরকারি কর্মকর্তা ও চালক, দুই পক্ষেরই সময় বাঁচবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

রবিবার (১৭ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে সরেজমিনে দেখা যয়, বরিশাল নগরীর কালিবাড়ি রোড সিতলাখোলা ট্রাফিক পুলিশ কার্যালয়ের গেটের মুখে সড়কে একটি চেকপোস্ট বসিয়ে মটরসাইকেল চালকদের অপরাধ যাচাইবাছাই করে অপরাধের ধারা ও বিবারণ অনুযায়ী ম্যানুয়াল ও সনাতন পদ্ধতিতে মামলা দায়ের ও জরিমানা আদায়ের স্লিপ দিয়ে নির্ধারিত ট্রাফিক অফিসে মামলা ভাঙানোর জন্য বলা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, ‘ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন অ্যান্ড ফাইন পেমেন্ট সিস্টেম’ নামক প্রযুক্তি নির্ভর কার্যক্রমের মধ্যদিয়ে ট্রাফিক বিভাগ ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করেছে। এ ব্যবস্থায় মামলার কপি নিয়ে যানবাহন চালক বা মালিককে ট্রাফিক অফিসে কিংবা ব্যাংকে গিয়ে আগের মতো লাইনে দাঁড়াতে হবে না। এছাড়া মামলা নিয়ে সন্দেহ ও অভিযোগও দূর হবে। বরিশালে দেখা যায় এর উল্টো চিত্র। বিভিন্ন চেকপোস্ট অথবা সার্জেন্ট ধারা পরিচালিত জরুরি চেকপোস্টে ভুক্তযোগীকে ম্যানুয়াল ও সনাতন পদ্ধতিতে মামলা দায়ের ও জরিমানা আদায়ের একটি কাগজ দিয়ে অফিসে দেখা করতে বলেন।

এ বিষয়ে এক ভুক্তভোগী প্রদিপ বলেন, ‘আমার গাড়ির কাজপত্র সবকিছু ঠিখ-ঠাক ছিলো। মাথায় হেলমেটও ছিলো। আজ তারপরও সার্জেন্ট আমার গাড়ির কাগজ পত্র দেখছে। কিন্তু এসময় চেকপোস্টে দ্বায়িত্ব পালনকারী সার্জেন্টন অন্যএকটি মটরসাইকেল চালককে মামলা দিয়ে আগের পুরনো সিস্টিমে একটি কাগজ ধরিয়ে দিতে দেখা যায়।’

ট্রাফিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পর্যায়ক্রমে পজ মেশিনগুলো সংশ্লিষ্ট ট্রাফিক বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। এ কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হলে জরিমানার টাকা দ্রুত পরিশোধ করে মামলার নিষ্পত্তি করা যাবে কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই।

সিতলাখোলা ট্রাফিক অফিসে মামলা ভাঙাতে যাওয়া মো. শাওন বলেন, ‘আমার গাড়ির মামলা ভাঙাতে গিয়ে সকাল থেকে বিকাল অব্দি সাড়াদিন ওই অফিসের সামনেই থাকা লাগছে। দির্ঘ সিরিয়াল থাকে এখানে। তবে এসব কাজ অনলাইন বা অন্য পদ্বতিতে করলে আমাদের আর দূর্ভোগ পোহাতে হতো না।’

পর্যায়ক্রমে প্রত্যেকে সার্জেন্টের কাছে পজ মেশিন সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘ট্রাফিক বিভাগের সফটওয়্যার প্রতিনিয়ত আপডেট হচ্ছে। এছাড়া ‘ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন অ্যান্ড ফাইন পেমেন্ট সিস্টেম’-এর পজ মেশিনে অনেক সময় নেটওয়ার্কে সমস্যা হয়। চার্জ থাকে না। এসব সমস্য গুছিয়ে সকল সার্জেন্টের কাছে পজ মেশিন প্রদান করা হবে। 

তিনি আরো বলেন, ‘ ট্রাফিক বিভাগ কোনও মামলা করলে সংশ্লিষ্ট গাড়ির কাগজপত্র জব্দ করা হয়। যে  কারনে মামলার নিষ্পত্তিতে নির্ধারিত ডিভিশনের ট্রাফিক বিভাগে উপস্থিত হয়ে টাকা জমা দিয়ে কাগজ নিয়ে আসতে হয়। এই প্রক্রিয়া এড়ানোর সুযোগ নেই। এছাড়াও কার্ডের মাধ্যমে মামলার টাকা পরিশোধ করা গেলেও অনেক ক্ষেত্রে জব্দ করা কাগজ নির্ধারিত ট্রাফিক পুলিশ অফিস থেকেই সংগ্রহ করতে হয়।