বরিশাল-ঢাকা নৌরুটসহ দেশের সর্বত্র লঞ্চ চলাচলের জোর প্রস্তুতি

বরিশাল-ঢাকা নৌরুটসহ দেশের সর্বত্র লঞ্চ চলাচলের জোর প্রস্তুতি

ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে কঠোর লকডাউন ৮ দিনের জন্য শিথিল হওয়ায় বরিশাল-ঢাকা নৌরুটসহ দেশের সর্বত্র লঞ্চ চলাচলের জোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে ফের শুরু হচ্ছে বরিশাল-ঢাকা রুটের যাত্রীবাহি লঞ্চ চলাচল। এই লক্ষ্যে লঞ্চগুলো ধোয়া-মোছার কাজ শেষ হয়েছে। এদিকে লকডাউন শিথিলের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে লঞ্চের আগাম টিকেট শেষ হয়ে গেছে।

২১ দিন পর গতকাল বুধবার কাউন্টার খোলার সঙ্গে সঙ্গে লঞ্চের আগাম কেবিন টিকেট বিক্রি শেষ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে লঞ্চ মালিক কর্তৃপক্ষ। টিকেট না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চের কেবিন টিকেট বিক্রি করা হয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলের উপর গুরত্বারোপ করেছে নদী বন্দর কর্তৃপক্ষ। 

ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে ৮ দিনের জন্য কঠোর লকডাউন শিথিল করে গণপরিবহন চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের এই ঘোষণা পাবার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলের প্রস্তুতি শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। একদিকে চলেছে লঞ্চ ধোয়া-মোছার কাজ। অপরদিকে গতকাল বুধবার থেকে লঞ্চের কাউন্টারগুলোতে চলে আগাম কেবিন টিকেট বুকিং।  

তবে অফিস খোলার পর গতকাল প্রথম দিনেই উধাও হয়ে গেছে কেবিন টিকেট। চাহিদা অনুযায়ী আগাম টিকেট না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। আবার কেউ কেউ টিকেট পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। 

বরিশাল-ঢাকা রুটের এমভি কীর্তনখোলা লঞ্চ কোম্পানীর সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. বেল্লাল হোসেন বলেন, আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে আগাম টিকেট বুকিং নিয়েছেন তারা। আগের চেয়ে চাপ কিছুটা কম হলেও প্রথম দিনেই আগাম কিটেক বুকিং শেষ হয়ে গেছে বলে তিনি জানান। 
একই রুটের এমভি সুন্দরবন লঞ্চ কোম্পানীর কাউন্টার ম্যানেজার মো. জাকির হোসেন বলেন, কাউন্টারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে টিকেট বুকিং নিয়েছেন তারা। লঞ্চও চালানো হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে।

লঞ্চ মালিক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মো. সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করতে বলেছে। স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করে লঞ্চ পরিচালনার যাবতীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। 

এদিকে বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা বলছেন, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই লঞ্চ পরিচালনা করতে হবে সংশ্লিষ্ট মালিকদের। ব্যাত্যয় হলে দায়িত্ব নিতে হবে স্ব-স্ব লঞ্চ মালিকদের। যাত্রী চাপ বেশী থাকলে লঞ্চে সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়া হবে বলে তিনি জানান। 
বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বুধবার মধ্যরাত থেকে শিথিল হচ্ছে লকডাউন। বরিশাল-ঢাকা রুটের লঞ্চগুলো যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায় প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে। সে হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার রাতে উভয় প্রান্ত থেকে যাত্রী নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। প্রতিটি লঞ্চে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার তাগিদ দেয়া হয়েছে। কোন লঞ্চে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট মাস্টার এবং মালিকরা দায়ী থাকবেন। তাদের বিরুদ্ধে নেয়া হবে যথাযথ ব্যবস্থা। 

করোনা সংক্রামণ বেড়ে যাওয়ায় এই দফায় ২২দিন বন্ধ রয়েছে যাত্রীবাহি লঞ্চ চলাচল। ঢাকা-বরিশাল নৌপথে চলাচল করে বিলাসবহুল ২২টি লঞ্চ। রাজধানীর সদরঘাট থেকে সারা দেশের ৪১টি নৌপথে চলাচল করে ২২০টি যাত্রীবাহী লঞ্চ।