বরিশাল নগরীতে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসুতি নারীর মৃত্যুর অভিযোগ

বরিশাল নগরীর বেলভিউ হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসকের অবহেলায় এক প্রসুতী নারী শাহনাজ পারভীন (৪০)-এর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় বেলভিউ মেডিকেল সার্ভিসেসের ভুল আল্ট্রাসনোগ্রাম এবং চিকিৎসকদের অবহেলাকে দায়ী করেছেন মৃতের স্বজনরা। তবে ওই নারীর মৃত্যুতে কর্তৃপক্ষের কোন গাফেলতি ছিলো না বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার ( ১৩ জুলাই) রাত নয়টার দিকে বেলভিউ মেডিকেল সার্ভিসেসের ভুল আল্ট্রাসনোগ্রামের উপর নির্ভর করে বিলম্বে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হলে ওই নারীর মৃত্যু হয় এমন অভিযোগ উঠেছে।
মৃত শাহানাজ পারভীন (৪০) জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার তরিকুল ইসলামের স্ত্রী। তার পৈত্রিক বাড়ি ঝালকাঠীর রাজাপুরে। এই প্রথম তার গর্ভে সন্তান ধারন করেন।
স্বজনরা জানান, গতকাল বৃহষ্পতিবার রাতে হেটে বেলভিউ মেডিকেল সার্ভিসের অপারেশন থিয়েটারে যান শাহানাজ বেগম। কিছুক্ষণ পর অপারেশন থিয়েটার থেকে তার নিথর দেহ বের হলেও স্বজনদের জানায়নি কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গড়িমসি দেখে রোগীর স্বজনদের সন্দেহ হয়। রাত ৯টার দিকে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গত ২৪ জুলাই তার প্রচুর রক্তাপত হলে ওইদিন ৫ মাসের অন্তঃস্বত্তা শাহানাজকে বেলভিউ মেডিকেল সার্ভিসেস-এর গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার জিকে চক্রবর্তীর তত্ত্বাবধানে ভর্তি করা হয়। ৫ আগস্ট বেলভিউতে একটি আল্ট্রাসনোগ্রামে শাহানাজের গর্ভের সন্তানের ভালো রিপোর্ট দেওয়া হয়। ১২ আগস্ট বাইরের একটি ডায়াগনস্টিকে ফের আল্ট্রাসনোগ্রামে তার গর্ভের সন্তান নড়াচড়া করেনা রিপোর্ট আসে। ওইদিন রাতে বেলভিউতে আবারও আল্ট্রাসনোগ্রাম করে গর্ভে বাচ্চা স্বাভাবিক আছে বলে তারা জানায়। আল্ট্রাসনোতে বেশ কয়েক দিন আগে শাহানাজের গর্ভের সন্তান মারা যাওয়ার রিপোর্ট আসলেও কর্তৃপক্ষ গর্ভপাত ঘটাতে কালোক্ষেপন করায় গতকাল রাতে তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ স্বজনদের।
নিহত শাহানজ পারভীনের স্বামী তরিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার আগে রোগীর শারীরিক নানা সমস্যা দেখা দেয়ার কথা কর্তব্যরত ডাক্তার-নার্সদের বারবার জানানো হলেও তারা কোন পদক্ষেপ নেয়নি। উল্টো তারা রোগীর স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে। ডাক্তারদের অবহেলার কারণে প্রসুতি শাহানাজের মৃত্যু হয়েছে। অভিযুক্তদের বিচার দাবি করেন তারা।
হাসপাতালের গাইনী বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জি,কে চক্রবর্তী বলেন, দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ সঠিক নয়। রোগীর শারীরিক অবস্থা অস্ত্রোপচারের জন্য উপযুক্ত না থাকায় বিলম্ব হয়েছে। রোগীর স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি।
এদিকে বেলভিউ কর্তৃপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ তড়িঘড়ি করে তার লাশ নামিয়ে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করে দেয়। পরে স্বজনরা রাজাপুরের পৈত্রিক বাড়িতে তার মরদেহ নিয়ে যায়।