বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিল,শনিবার মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা

গভীর রাতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মেসে ঢুকে নির্যাতনকারীদের ৪৮ ঘন্টার মধ্যেও গ্রেপ্তার না করায় ফের বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যায় মশাল মিছিল করে শনিবারও মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার বিকেল ৫টায় হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে শিক্ষার্থীদের ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কর্ণকাঠী এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে তারা।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে ব্যস্ততম এই মহাসড়েক সব ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ যাত্রীরা। পরে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বৈঠক শেষে আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় ফের অবরোধের ঘোষণা দিয়ে শুক্রবার রাত সাড়ে ৭টায় অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়।
গত মঙ্গলবার গভীর রাতে নগরীর রূপাতলী হাউজিংয়ের মেসে ঢুকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ২০জন শিক্ষার্থীকে মারধর করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ওই রাত থেকেই টানা ৪০ ঘন্টা মহাসড়ক অবরোধ করে তারা। অবরোধকালে তারা বেশ কিছু যানবাহন ভাঙচুর এবং একটি বাস পুড়িয়ে দেয়। পরদিন বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ত্রিপাক্ষীয় বৈঠকে ৩ শর্তে ওইদিন বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে অবরোধ সাময়িক স্থগিত করা হয়। শিক্ষার্থীদের দেওয়া তিন শর্তের মধ্যে ছিল ৪৮ ঘন্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার কারা। শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় কর্তৃপক্ষের মামলা দায়ের, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মামলা দায়ের করলেও নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। হামলার সময় চিহ্নিতদের আসামী না করে অজ্ঞাতানামাদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলাকেও দায়সারা বলে অভিযোগ করেছে শিক্ষার্থীরা। এর প্রেক্ষিতে গতকাল বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এতে গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কে সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন শিক্ষার্থী তানজুম তমা।
এদিকে গুরুত্বপুর্ণ মহাসড়ক অবরোধের ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। বিশেষ করে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা এবং পায়রা বন্দরে যাতায়াতকারী পরিবহনগুলো পড়েছে বেকায়দায়। যান চলাচল বন্ধ থাকায় সাধারণ অনেক যাত্রী পায়ে হেটে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা অতিক্রম করছে। দাবি আদায় জোড়ালো করতে সন্ধ্যার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মহাসড়কে মশাল মিছিল করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সুব্রত কুমার দাস জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সন্ধ্যা ৭টার পর শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলোচনায় বসে। আলোচনার পর শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে রাত সাড়ে ৭টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করানো হয়।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষার্থীরা প্রশাসনকে আরও সময় দিয়েছে। আগামীকাল সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে কোন হামলকারী গ্রেপ্তার না হলে ফের সড়ক অবরোধ করা হবে।