বরিশাল মহানগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে আগাম প্রস্তুতি

বরিশাল মহানগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে আগাম প্রস্তুতি

বরিশাল মহানগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে আগাম প্রস্তুতি নিয়েছে বরিশাল সিটি করপোরেশন। বরিশাল জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন সমন্বিতভাবে এই কাজ শুরু করেছে। আগামী বর্ষা মৌসুমে যাতে নগরে জলাবদ্ধতা দেখা না দেয় সেজন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানানসিটি মেয়র ও জেলা প্রশাসক। নগরের খাল দখল মুক্ত ও খনন করে পানি প্রবাহ ঠিক রাখতে মাসব্যাপী কর্মসূচি পরিচালনা করা হবে।

সোমবার (২৬ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে নগরের চৌমাথা এলাকায় নবগ্রাম খালের পাড়ে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও খাল পচ্ছিন্নতার মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বরিশালের জেলা প্রশাসক জসমি উদ্দনি হায়দার, বরিশা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফারুক হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রাজিব আহম্মেদ, বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কমকতা মো. মুনিবুর রহমান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিশাত তামান্নাসহ বরিশাল সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরবৃন্দ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, বরিশালকে বলা হতো বাংলা ভেনিস। নগরের মধ্য দিয়ে ৪৬টি খাল প্রবাহিত ছিল। সেই খালের অধিকাংশ দখল হয়ে গেছে। এসব কারণে একটু বৃষ্টি হলেই বরিশাল মহানগরে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। আগামী বর্ষ মৌসুমে জলাবদ্ধদতা থেকে রক্ষা পেতে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এর অশং হিসেবে নগরের সাগরদি খালের একটি অংশ পরিচ্ছন্নতা এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে প্রবাহন ৪টি খালসহ ৪৬ খাল পুনরুদ্ধার করা হবে। খালের প্রবাহ ঠিক রাখতে পারলে জলাবদ্ধতা দেখা দেবে না। আগামী এক মাস নগরের সব খাল পরিচ্ছন্নতা এবং খনন কাজ চালানো হবে।

মেয়র বলেন, সমুদ্রপীঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবে আমরাও পর্যুদস্ত। এই প্রভাব থেকে মুক্তির পায় হচ্ছে খাল ও জলাশয় ভরাট দখল বন্ধ করা। বরিশাল নগরের অনেক খাল বর্তমানে ড্রেনে পরিণত হয়ে গেছে। আমরা পর্যায়ক্রমে নগরের সকল খালে নাব্যতা ফিরিয়ে আনাতে হবে। তা না হলে জলাবদ্ধতা নিরসন করা সম্ভব হবে না। এই কাজে নরবাসীকেও সহযোগী হতে হবে। 

মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, আমরা সিটি করপোরেশন থেকে নগরের ৪৬ খাল উদ্ধার ও খনন করে প্রবাহ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছি। প্রথম ধাপে ১২টি খাল খালের পাশে ওয়াকওয়ে ও সৌন্দর্যবর্ধন এবং বিনোদনকেন্দ্র করা হবে। পর্যায়ক্রমে বাকি খালগুলোও উদ্ধার করা হবে। বরিশাল সিটি করপোরেশন নগরের ৪৬ খাল নিয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ২৬০০ কোটি টাকা ব্যয় ধরে একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই প্রকল্প অনুমোদন হলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, আমরা যেটুকু জেনেছি বরিশালের মানুষের বড় সমস্যা হচ্ছে জলাবদ্ধতা। খালগুলোর দুইপাশ থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে কীর্তনখোলা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত করা দরকার। নদীর সঙ্গে খালের লিংক করা থাকেল পানি আর নগরে জমে থাকতে পারবে না। খালগুলো খাস খতিয়ানের হওয়ায় সেগুলো দেখভাদের দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের ওপরও বর্তায়। তাই আমরা সিটি করপোরেনের সঙ্গে সমন্বিতভাবে খাল পরিচ্ছন্ন খনন এবং খালের প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে কাজ শুরু করেছি। এটা একটা সমন্বিত উদ্যোগ। আগামী বর্ষার আগে খালের পাশে থাকা অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে হবে। নাগরিক সুবিধার জন্যই সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন যৌথ এই কাজ শুরু করেছে।