বরিশাল মেডিকেলের ডাক্তার-নার্সসহ ১১জন আক্রান্ত, অর্থপেডিক বিভাগ লকডাউন

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থপেডিক বিভাগের চিকিৎসক-নার্সসহ ১১জন করোনা আক্রান্ত হওয়ায় পুরো অর্থপেডিক বিভাগ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই বিভাগের দায়িত্বরত অন্য চিকিৎসক-নার্সদের আইস্যুলেশনে পাঠানো হয়েছে। করোনা পজেটিভ রোগী তথ্য গোপন করে সেবা নিতে গিয়ে ওই বিপর্যয় হয়েছে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
আজ শনিবার দুপুর একটা থেকে অর্থপেডিক বিভাগ লকডাউন করে স্বপ্লপরিসরে মেডিসিন বিভাগের সঙ্গে অর্থপেডিক সেবা চালু থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থপেডিক বিভাগের সার্জন ডা. সুদীপ হালদার বলেন, অর্থপেডিক বিভাগের দুই করোনা পজেটিভ রোগী তথ্য গোপন করে ভর্তি হন। তারা কয়েকদিন ওই বিভাগে চিকিৎসা নেন। পরে বিষয়টি আমরা জানতে পারি। এরপর অর্থপেডিক বিভাগের সব ডাক্তার, নার্স ও রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করে কলেজের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়। গতকাল আমরা জানতে পরি ডাক্তার ও নার্সসহ ১১জন করোনা পজেটিভ হয়েছে। সেই কারণে পুরো অর্থপেডিক বিভাগ বন্ধ করা হয়েছে। স্বল্পপরিসরে অর্থপেডিক বিভাগ চালু রাখতে মেডিসিন বিভাগের সঙ্গে চিকিৎসা দেওয়া হবে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেবা তত্তাবধায়ক সেলিনা আক্তার বলেন, প্রতিদিন আমার নার্সরা আক্রান্ত হচ্ছে। গতকাল অর্থপেডিক বিভাগে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ৭জন নার্স আক্রান্ত হয়েছে। আমরা চরম ভীতির মধ্যে কাজ করছি। নার্সদের করোনা পরীক্ষা করা দরকরার। কিন্তু সেখানে নার্সরা সহযোগিতা পাচ্ছে না। অনেক নার্স দায়িত্ব পালন করতেই ভয় পাচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশেষজ্ঞ এক চিকিৎসক অভিযোগ করেন, সিভিল সার্জন কার্যালয়, বরিশাল সিটি করপোরেশন, পুলিশ হাসপাতালসহ সব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নমুনা সংগ্রহ করার কথা। সিভিল সার্জনসহ অন্যরা দায়িত্ব এড়ানোর জন্য নমুনা সংগ্রহ বন্ধ করে দিয়েছে। সবাই এখন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে এসে চরম ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। এইভাবে চলতে থাকলে আগামীতে এই হাসপতালের সেবাও বন্ধ হয়ে যাবে। আগে তো ডাক্তার, নার্সদের সুস্থ্য থাকতে হবে। তারা সুস্থ্য না থাকলে কিভাবে সেবা দেবে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন বলেন, করোনা পজেটিভ দুই রোগী ৭দিন ধরে অর্থপেডিক বিভাগে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তথ্য গোপন করায় সেখান থেকে আমাদের একজন চিকিৎসক, ৭জন নার্স এবং ৩জন রোগী পজেটিভ হয়েছে। তাই অর্থপেডিক বিভাগ ৭দিনের জন্য বন্ধ করা হয়েছে। আর অর্থপেডিক বিভাগ মেডিসিন বিভাগের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। নার্সদের করোনা পরীক্ষার বিষয়ে বলেন, যাদের করোনা উপসর্গ আছে তাদের পরীক্ষা হচ্ছে। যাদের নেই তাদের কেন পরীক্ষা করবে। তাই সব নার্সদের পরীক্ষা এই মহূর্তে দরকার নেই।