বরিশালে এক দফা দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের মানববন্ধন

বরিশালে এক দফা দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের মানববন্ধন

শিক্ষা জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে বরিশালে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক-কর্মচারীরা। বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি (বাকশিস), বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (ফেডারেশন), বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (কারুজ্জামান) ও বাংলাদেশ বেসরকারি তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারি ইউনিয়রে বিভিন্ন পর্যায়ের শত শত নেতাকর্মিসহ সাধারণ শিক্ষক কর্মচারিরা অংশ নেয়।

আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বরিশাল নগরের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে সদর রোডে এ কর্মসূচির আয়োজন করে বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি (বাকশিস) বরিশাল বিভাগীয় কমিটি।

বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির বরিশাল বিভাগীয় কমিটির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বাকশিস বরিশাল বিভাগীয় কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আমিনুর রহমান খোকন, যুগ্ম-আহ্বায়ক ও মহানগর কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ মো. হানিফ হোসেন তালুকদার, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (ফেডারেশন) সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (কারুজ্জামান) বরিশাল বিভাগীয় কমিটির সহসভাপতি অধ্যক্ষ প্রণব বেপারি, শিক্ষক নেত্রী মানিক মিয়া মহিলা কলেজ অধ্যাপক শিবানী রায় চৌধুরী, প্রধান শিক্ষক সফিউল আজম, বাকশিস পটুয়াখালী জেলা আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আব্দুস ছালাম, বাংলাদেশ বেসরকারি তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারি ইউনিয় কেন্দ্রীয় সহসভাপতি জিয়া শাহীন।

মানববন্ধন পরিচালনা করেন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক মো. মোশাররেফ হোসেন খান।

এসময় শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, বেসরকারি, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার প্রায় ৫ লক্ষ শিক্ষক-কর্মচারী দীর্ঘ দিন যাবৎ নানা অব্যবস্থা ও অপ্রাপ্তির কারণে পাহাড় সমান বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এমন অবস্থায় শিক্ষাকতার মতো মহান পেশায় থেকে জাতি গড়ার জন্যে সুচারুরূপে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে শিক্ষক-কর্মচারীরা। নানা অপ্রাপ্তির মাঝেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন সুবিধা দিয়েছেন। যার কারণে ৮ম পে স্কেলে অর্ন্তভুক্ত হয়ে বেতন ভাতার মূল অংশ পাচ্ছে শিক্ষকরা। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী আমাদের ৫% বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ও ২০%  বৈশাখী ভাতার ব্যবস্থাও করেছেন।

বক্তারা বলেন, এখনও আমরা উৎসভ ভাতা পাচ্ছি মাত্র মূল বেতনের ২৫%, ঘরভাড়া পাচ্ছি মাত্র ১ হাজার টাকা, চিকিৎসা ভাতা পাচ্ছি মাত্র ৫ শত টাকা। আর বৃদ্ধ বয়সে নিরাপত্তার জন্য নাই পেনশন বা গ্রাচুইটির কোনো ব্যবস্থা; নাই কোন সামাজিক মর্যাদা। দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে এ বৈষম্য, লাঞ্চনা ও অবহেলার শিকার হয়েও শিক্ষকতার পেশায় থেকে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রায় ৯৬% শিক্ষা বেসরকারিরাই প্রদান করে আসছে। বক্তারা বলেন, ১৯৭৩ সালে যুদ্ধ বিদ্ধস্ত স্বাধীন বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোটা বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করেছিলেন। তার ধারাবাহিকতায় ও অনুপ্রেরণায় বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি সকল রেজিস্ট্রার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারিকরণ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রীকে প্রানঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তারা বলেন, আজ দেশের সকল জনগণের প্রাণের ও সময়ের দাবি হচ্ছে শিক্ষা জাতীয়করণ করা, যা একমাত্র জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রীই পারেন। তিনি আমাদের বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীর দু:খ ও দুর্দশা লাগব করতে পারেন। জাতির শিক্ষা উন্নয়নের স্বার্থে এবং দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষকে চির স্মরণীয় করে রাখতে একযোগে সকল এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ করার ঘোষণার দাবি জানান বক্তরা। সেইসঙ্গে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণের এক দফা দাবি মেনে নিতে ও এই ঈদেই ১০০% উৎসব বোনাস প্রদানে জোর দাবি জানান।

পরে অশ্বিনী কুমার হলের সামনে থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। যে মিছিলটি নগরের প্রধান প্রধান সড়ক হয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর এক দফা দাবি আদায়ে বিভিন্ন যৌক্তিকতা তুলে ধরে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন শিক্ষক নেতারা।