বরিশালে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ

বরিশালে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে শয্যা খালি নেই। মেঝেতে রোগী ভর্তি আছে। আইসিইউ সেবা দরকার এমন রোগীর সংখ্যাও দ্বিগুন। ব্যবস্থা অপ্রতুল হওয়ায় সবাইকে আইসিইউ সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে করোনা ওয়ার্ডে। এমন বাস্তবতায় করোনা সংক্রমণ এড়াতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আর কোন বিকল্প নেই।
বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতি গত বছরের তুলনায় দশগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে আশঙ্কজনহারে রোগী বেড়েছে। অন্যদিকে মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবেও বেড়েছে করোনা শনাক্তের হার। কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানার উদ্যোগ নেই। ফলে অবস্থা ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। হাসপাতলে রোগী ভর্তির হার কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন বাস্তবতায় সাধারণ মানুষের যথেচ্ছার ঘোরাফেরা নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল বিকেল ৪টা পর্যন্ত করোনা ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি ছিলো ১২২জন। এর মধ্যে ২৪ জনের করোনা পজেটিভ। করোনা ওয়ার্ডের ১২টি আইসিইউ বেডের সবগুলোইতেই রোগীতে পরিপূর্ণ। আরও অন্তত ২০জন আছেন আইসিইউ সেবা পাওয়ার অপেক্ষায়। গত রোববার করোনা ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি ছিলো ১১৮জন। যার মধ্যে করোনা পজেটিভ ছিলো ২৬ জনের। ওই দিনও আইসিইউতে ভর্তি ছিলো ১২জন রোগী। গত শনিবার ২৮জন করোনা পজেটিভসহ ১১২জন রোগী ভর্তি ছিলো করোনা ওয়ার্ডে। ওই দিনও আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন ১২জন মুমূর্ষু রোগী। ব্যবস্থা না থাকায় তারা সেই সেবা পাচ্ছেন না। এমন হারে রোগীর চাপ বাড়লে স্বাভাবিক সেবা কার্যক্রম সচল রাখা কঠিন হবে।
গত ২৪ ঘন্টায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবে ১৭৪ জনের নমূনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪০জনের। শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৯৮ভাগ। এর আগের দিন গত শনিবার ১৭৪ জনের নমূনা পরীক্ষায় ৩৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ছিলো ২১ দশমিক ২৬ ভাগ।
গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে গতকাল পর্যন্ত বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন ৩ হাজার ৪৯২জন রোগী। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫০০ জনের। যার মধ্যে ১৪৬ জনের করোনা পজেটিভ ছিলো।
এমন বাস্তবতায় কেবল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের দিকে তাকিয়ে থাকলে চলবে না। সবাইকে সচতেন হতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে পরিপালন করতে হবে। করোনা আক্রান্ত না হয় সেজন্য আগেভাগে বাড়িতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করতে হবে। অযথা ভীড় না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সবাইকে সম্মিলিতভাবে করোনা সংক্রমণ এড়াতে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। তা না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হবে।