বরিশালে চিরনিদ্রায় শায়িত বিচারপতি নাজমুল আহসান

সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগে সদ্য নিয়োগ পাওয়া বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসানের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯ টায় বরিশাল নগরীর অশ্বিনী কুমার হলের সামনে তার দ্বিতীয় জানাজা সম্পন্ন হয়। এতে সহস্রাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এর আগে সকাল ১১টার পর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনসংলগ্ন প্রাঙ্গণে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজায় বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ মোঃ রফিকুল ইসলাম , চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মহিবুল ইসলাম, চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কবির উদ্দিন প্রামাণিক, বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আমিন উল আহসান, জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার, বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ, উদীচী বরিশাল জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ,বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী সমিতি নেতৃবৃন্দ, বরিশাল প্রেসক্লাব, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সহ মরহুম বিচারপতির ভাই তৌফিক মারুফ, ছেলে তাঈম হাসান প্রান্তসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
জানাজা শেষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের শ্রদ্ধা শেষে নগরীর বরিশাল মুসলিম গোরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে কাউনিয়া জানকিসিংহ রোডের বাড়িতে মরহুমের লাশ তার মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়া হলে স্বজনদের মাঝে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এদিকে শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ভোর সোয়া ৬টার দিকে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন সদ্য নিয়োগ পাওয়া এই বিচারপতি।
৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগে কর্মরত অন্য তিন বিচারপতির সঙ্গে নাজমুল আহাসানও আপিল বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। শপথ গ্রহণের দিন থেকে নিয়োগ কার্যকর হবে বলে নিয়োগসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়। নিয়োগপ্রাপ্ত এই চার বিচারপতির মধ্যে বোরহান উদ্দিন, এম. ইনায়েতুর রহিম ও কৃষ্ণা দেবনাথ গত ৯ জানুয়ারি শপথ নেন। শপথের পর সেদিন থেকেই তারা আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে বিচারকাজ পরিচালনা করে আসছেন। তবে বিচারপতি নাজমুল আহাসান করোনা সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় শপথ নিতে পারেননি।
উল্লেখ্য, ১৯৫৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জেলার হিজলা উপজেলার মেমানিয়া ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন এফ আর এম নাজমুল আহসান। তার পিতার নাম মো. আনোয়ার হোসেন ও মাতার নাম জাহানারা বেগম। তিনি সরকারি ব্রজমোহন কলেজ থেকে বিএ (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের পর বরিশাল ল কলেজ থেকে এলএলবি পাস করে ১৯৮৬ সালের ১৮ মার্চ বরিশাল জেলা আদালতের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়ে কাজ শুরু করেন।
১৯৯৪ সালের ২২ জানুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগের ও ২০০৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন তিনি। পরে ২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান। পরে ২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল স্থায়ী হন।