বরিশালে ঠান্ডাজনিত রোগে কাবু শিশুরা,সপ্তাহের ব্যবধানে রোগী বেড়েছে

বরিশালে ঠান্ডাজনিত রোগে কাবু শিশুরা,সপ্তাহের ব্যবধানে রোগী বেড়েছে

বরিশালে ঠান্ডাজনিত জ্বর, সর্দি, কাশী, নিউমোনিয়া, খিচুনী, শ্বাসকস্ট ও ডায়রিয়ায় কাবু শিশুরা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেড়গুণ রোগী বেড়েছে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ধারন ক্ষমতার অধিক রোগী হওয়ায় শয্যা না পেয়ে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে শিশুদের। এই সময়ে শিশুদের ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিশু বিশেষজ্ঞরা। তাদের জন্য নানা পরামর্শও দিয়েছেন তারা। স্থান সংকট হওয়ায় একই শয্যায় ২ থেকে ৩জন শিশু রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিচালক। 

শের-ই বাংলা মেডিকেলের দ্বিতীয় তলায় শিশু বিভাগে পা ফেলার জায়গা নেই। একই বেডে একাধিক শিশুর চিকিৎসা দিয়েও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। শয্যা ছাড়িয়ে মেঝে, বারান্দায় এমনকি করিডোরেও চিকিৎসা নিচ্ছে নবজাতক শিশুরা। 

প্রসুতি মায়েরা জানান, শীতের শুরুতে জ্বর, সর্দি, কাশী, নিউমোনিয়া, খিচুনী, শ্বাসকস্ট ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। গ্রামে শীতের প্রকোপ বেশী হওয়ায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অধিকাংশ শিশু গ্রামের। শহরের শিশুরাও চিকিৎসাধীন আছে। হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে অনেকে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আবার কেউ কেউ সপ্তাহ এমনকি পক্ষকালব্যাপী চিকিৎসা নিচ্ছে হাসপাতালে। ওই ওয়ার্ডে এক শয্যায় চিকিৎসা নিচ্ছে ২ থেকে ৩ জন শিশু। এতেও স্থান সংকুলান না হওয়ায় ফ্লোরে, বারান্দায় এমনকি করিডোরে শুয়েও চিকিৎসা নিচ্ছে শিশুরা। শীতে ফ্লোরে চিকিৎসা নিতে শিশুদের আরও সমস্যা হচ্ছে। হাসপাতালে সব ধরনের ওষুধ দেয়ার কথা থাকলেও বেশীরভাগ ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে অভিভাবকদের। তারা হাসপাতালে শিশুদের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা দাবী করেন। 

 

শের-ই বাংলা মেডিকেলের শিশু বিভাগের নার্সিং ইনচার্জ সুপ্তী সিকদার জানান, গত সপ্তাহে শিশু ওয়ার্ডের ৬০ শয্যায় দৈনিক গড়ে চিকিৎসাধীন ছিলো ১৬০ জন শিশু। এ সপ্তাহে দৈনিক চিকিৎসা নিচ্ছে প্রায় আড়াই শ’ শিশু। নভেম্বর মাসে এই ওয়ার্ডে মারা গেছে ২৭ জন এবং ডিসেম্বরে গতকাল পর্যন্ত ২৪ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। 

শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার সাহা জানান, শীতের এই সময়ে শিশুদের ঠান্ডাজনিত ৭টি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝূঁকি থাকে। শীত জনিত রোগ থেকে বাঁচতে শিশুদের পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, পুস্টিকর খাবার প্রদান, ধোয়া ও ঠান্ডা থেকে দূরে রাখা, ৬ মাস পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো পরামর্শ দেন তিনি। 

সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করে পরিস্থিতি সামাল দিতে শিশু বিভাগে সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর চেস্টা চলছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম। আন্তঃওয়ার্ড ছাড়াও বর্হিবিভাগে সরকারী খোলার দিন চিকিৎসা নিচ্ছে গড়ে ৩ শতাধিক শিশু।