খুলনা-বরিশালের স্বপ্ন জোড়া দিচ্ছে বেকুটিয়া সেতু , চালু হচ্ছে জুনে

পায়রা সেতুর পর আরো একটি স্বপ্না বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে দক্ষিণজনপদ মানুষের। পিরোজপুরে কচা নদীর ওপর বেকুটিয়া পয়েন্টে অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী ৯৯৮ মিটার দৈর্ঘ্য সেতুর নির্মাণকাজ শেষে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। আশা করা হচ্ছে আগামী জুন মাসে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটি। সেতুর নির্মাণ কাজ শত ভাগ সম্পন্ন হওয়ার পরে প্রতিদিন সেতুটি দেখতে কৌতুহল মানুষের ঢল নামে।
সেতুটি চালু হলে বরিশাল-পিরোজপুর-বাগেরহাট-খুলনা, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে যাতায়াতে সময় অনেক কমবে। এমনকি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের দক্ষিণবঙ্গের বরিশাল, কুয়াকাটা পর্যন্ত ফেরিবিহিন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার স্বপ্নের দুয়ার খুলে যাবে বলে মনে করেন উপকারভোগীরা।
এদিকে বরিশাল থেকে ভারতগামী যাত্রীদের আগে ২৫৫ কিলোমিটার সড়ক পথ পারি দিতে হতো। সেতুটি খুলে দিলে বরিশাল রুপাতলি বাস স্টান্ড থেকে ২০১ কিলোমিটার পরি দিয়ে বেনাপোলে পৌঁছাতে পারবে ভারতগামী যাত্রীরা। এতে ৫৫ কিলোমিটারের সড়ক কম পারি দিতে হবে তাদের।
বেকুটিয়া পয়েন্টের স্থানীয় বাসিন্দা মো. সোহাগ বলেন, ‘পায়রা সমুদ্র বন্দর, পায়রা তাঁপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা সেতু এই তিনি প্রকল্প পুরো দক্ষিণজনপদ বদলে দিয়েছে। তার মধ্যে আবার এই বেকুটিয়া সেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। যার মাধ্যমে দক্ষিনের সকল জেলাগুলোর সাথে একটি ভালো যোগাযোগ ও যাতায়েতের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ধরেই এই দক্ষিণঞ্চালের এত এত উন্নয়ন হচ্ছে। সেতুটি আগামী জুন মাসের শেষ দিকে সেতুটি উদ্বোধন হতে পারে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ইতি মধ্যে সেতুটি দেখার জন্য বিকালে মানুষের ঢল নামে। তবে কোন যানবাহন যাতে প্রবেশ করতে না পারে এজন্য সেতুর দুই পাশ আটিয়ে রাখা হয়েছে।
বেসরকারী ব্যাংকের চাকরিজীবী রোকন ব্যাপারী বলেন, ‘আমার বাড়ি বরিশালে। চাকরির উদ্দেশ্যে খুলনাতে বসবাস করতে হচ্ছে। কিন্তু কচা নদীর ফেরির দুভোর্গের কথা ভেবে সাপ্তাহীক ছুটিতে বাড়ি উদ্দেশ্যে যেতে চাইতাম না। শুনেছি আগামী জুন মাসেই সেতুটি উদ্বোধনের কথা রয়েছে।’ তবে এই সেতুর দ্বার উন্মোচন হলে দুভোর্গ আর থাকবে না বলে মনে করেন তিনি।
৯’শ ৯৮ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৩ দশমিক ৪০ মিটার প্রস্থ এই সেতুতে ৯টি স্প্যান ও ১০টি পিলার বসানো হয়েছে। সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬৫৪ কোটি টাকা গ্রান্ড অনুদান দিয়েছে চীন সরকার। বাকি ২৪৪ কোটি টাকার জোগান দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। ৪২৯ মিটার ভায়াডাক্টসহ সেতুর দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৪২৭ মিটার এবং প্রস্থ ১০ দশমিক ২৫ মিটার (ডবল লেন)।
বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু প্রকল্প ও বরিশাল সড়ক ও জনপথ সূত্রে জানা গেছে, আগামী জুন মাসে এই সেতু খুলে দেওয়া হতে পারে। জিটুজি পদ্ধতিতে সেতু নির্মাণের দায়িত্ব পায় চীনের ‘চায়না রেলওয়ে সেভেনটিন ব্যুরো গ্রুপ কোম্পানী লিমিটেড’। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে সেতু নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন।
সেতু উদ্বোধনের সম্বভ্য তারিখ জানতে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও বরিশাল সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুম মাহমুদ সুমনের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একাধীক বার মুঠোফোনে কল দিলে তাকে পাওয়া যায়নি।