বরিশালে তীব্র গরমে এসির চাহিদা বাড়ায় সরবরাহে ঘাটতি

বরিশালে তীব্র গরমে এসির চাহিদা বাড়ায় সরবরাহে ঘাটতি

 

বরিশালে তীব্র গরমে বেড়েছে এসির চাহিদা। নগরীর বিভিন্ন কোম্পানির শোরুমগুলোতে এখন এসি বিক্রির ধুম চলছে। স্বল্প আয়ের মানুষজন ঈদের কেনাকাটা কমিয়ে এসি কিনতে ছুটছেন বিভিন্ন শোরুমে। এতে এসির ব্যাপক চাহিদা থাকায় স্টক সংকটে পড়েছে নামিদামি শোরুমগুলোও। ক্রেতারা অগ্রিম বুকিং দিয়েও এসি পেতে হিমশিম খাচ্ছেন।

গতকাল মঙ্গলবার নগরীর সদর রোড, বাংলাবাজার, সিঅ্যান্ডবি রোড, বগুড়া রোড, নথুল্লাবাদ সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, গরমে মানুষ এসি কিনতে শোরুমগুলোতে ভিড় করছেন। তাদের মধ্যে অনেকে এসি না পেয়ে ঘুরছেন বিভিন্ন শোরুমে। আবার কেউ কেউ অগ্রিম বুকিং দিতে ভিড় জমাচ্ছেন। প্রায় শোরুমে কিস্তির সুবিধা থাকায় ক্রেতাদের মধ্যে বেশির ভাগই স্বল্প আয়ের মানুষ।

বাংলাবাজারের ওয়ালটন প্লাজার ডেপুটি ম্যানেজার শওকত হোসেন বলেন, ‘গত কয়েক দিনে আমাদের বরিশালে যে গরম পড়েছে, তাতে আমাদের হিউজ পরিমাণে এসি সেল হচ্ছে। দেখা যায়, এখন কাস্টমারের চাহিদার তুলনায় আমরা এসি সাপ্লাই দিতে পারছি না।’

ওয়ালটন প্লাজার সেলস অফিসার মো. মোসাদ্দিক রিন্টু বলেন, ‘অত্যধিক গরমে এসি বিক্রি বাড়ায় বর্তমানে সোল্ড আউট। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী এসি দিতে পারছে না ওয়ালটন। ১ থেকে ৫ টনের এসি তৈরি করা হয় ক্রেতাদের জন্য। ৪২ হাজার ৯০০ টাকা থেকে শুরু করে সিরিজভেদে ডিজাইন ও প্রযুক্তি অনুযায়ী ওয়ালটন এসি বানায় ক্রেতাদের জন্য।’ তবে ওয়ালটনে কিস্তির সুবিধা থাকায় ক্রেতারা বেশি আসেন এই শোরুমে।

স্কয়ার ইলেকট্রনিকের সিনিয়র সেলস এক্সিকিউটিভ গাজী সাকিব ইমরান বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ আগেও আমরা বুঝতে পারিনি এত পরিমাণে এসি সেল হবে। আমাদের শোরুম থেকে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০টি এসি সেল হচ্ছে। মনে হয় যেভাবে টেম্পারেচার বাড়ছে তাতে এসির সেল আরও বাড়বে। আমরা এখন কাস্টমারকে এসি দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছি। কারণ আমাদের স্টক সীমিত। ৪৮,৯০০ টাকা থেকে শুরু করে ডিজাইনভেদে ৩ লাখ টাকার পর্যন্ত এসি পাওয়া যায় স্কয়ার ইলেকট্রনিকে। তাই শোরুমগুলোতেও বর্তমানে এসির সংকট চলছে।’

ক্রেতা কাজী রমিজ বলেন, ‘এসি কিনতে বের হয়ে দেখি বাজারে এসি নেই। আমি হতাশ হয়েছি। এরপর সিঅ্যান্ডবি রোডে, বাংলাবাজারে ঘুরলাম; কিন্তু পেলাম না। দুদিন অপেক্ষা করতে হবে। এরপর এই সদর রোডে এলাম হয়তো এখানে পাব।’ তবে মডেলভেদে শোরুমে এসির ব্যাপক সংকট রয়েছে।

বেসরকারি কোম্পানির চাকরিজীবী মো. আহসান বলেন, ‘গরম এত পরিমাণে পড়ছে, ঘরের ছোট বাচ্চারা আছে; ওদের পড়াশোনা করতে হয়। রাতে ঘুমানো যায় না, এখন গরমে অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছি। এসি না কিনে তো উপায় নেই। ফ্যানের বাতাসও গায়ে লাগে না। ফ্যান থেকে গরম বাতাস বের হয়।’

ট্রান্সকম ডিজিটালের অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মো. রায়হান হোসেন বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর গরমে এসি বিক্রির চাপ বেড়েছে। বর্তমানে প্রোডাকশন কম এসির। এলসির কারণেও এসি কম আসে বাংলাদেশে। বরিশাল অঞ্চলে গরমে এবং ঈদের কারণে এসি বিক্রি বেড়ে গেছে। আমাদের ট্রান্সকমে ৪৬ হাজার ৯০০ টাকা থেকে শুরু এসি। গড়ে সপ্তাহে ২০ থেকে ৩০টি এসি বিক্রি হচ্ছে।’ তবে ক্রেতারা অগ্রিম টাকা দিয়ে বুকিং দিচ্ছেন।##