বরিশালে ধর্ষণের বিচার দাবিতে উদীচীর প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ

বরিশালে ধর্ষণের বিচার দাবিতে উদীচীর প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ

‘সামনে যাবার পথ ছেড়ে দাও ছাড়ো... মিথ্যে লোভের ডালপালা আজ যতোই নাড়াও... ফিরছি না আর সকাল ফেলে রাতের খাঁচায়’ এমন প্রতিবাদী সঙ্গীতের মাধ্যমে বরিশালে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী বরিশাল জেলা সংসদ। উদীচী আয়োজিত প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ এর ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন।

আজ শনিবার সকাল ১০টায় নগরের অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে ওই প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

লাল-সবুজের মানচিত্রর মর্যাদা রক্ষা এবং জাতীয় পতাকার প্রতি সম্মান জানিয়ে অংশগ্রহণকারী সবাইকে নিয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ শেষ হয়।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বিবস্ত্র করে নারীকে নির্মম নির্যাতনের ঘটনা পাশবিকতার বহিপ্রকাশ বলে মনে করে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। সঙ্গে সিলেটের এমসি কলেজে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে ধর্ষণ, উপজাতী নারী ধর্ষণসহ সারা দেশে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- দেওয়া এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আপত্তিকর বক্তব্যের প্রতিবাদে বরিশাল উদীচী প্রতিবাদী ওই সাংস্কৃতিক সমাবেশ করেছে।

প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকারের স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রীর দায়িত্বহনী বক্তব্য ধর্ষকদের উৎসাহিত করবে। পৃথিবীর অন্য দেশে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে এমন বক্তব্য কোনভাবেই কাম্য নয়। ধর্ষণের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে যখন গোট জাতি সোচ্চার সেই মুহূর্তে তার এমন বক্তব্য আমারে লজ্জায় ফেলেছে।

বক্তারা বলেন, আমরা লক্ষ্য করি স্বরাস্ট্র মন্ত্রী কথা রেশ ধরে আওয়মী লীগের অনেক নেতারা ধর্ষণের ঘটনায় বিচার চাইতে গিয়ে নারীরা কেন গভীর রাতে বাইরে থাকে, কেন তারা সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্যে দেয় তাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন। তারা মূলত ধর্ষণের বিচার দাবি করেন না। তারা ধর্ষণকারীদের উৎসাহ দিচ্ছেন। নারী কখন বাইরে যাবে সেটা বড় কথা নয়। নারীর নিরাপত্তা দিতে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে। আর দিনে রাতে অহরহ যে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়ে চলছে তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বিচার হীনতার সংস্কৃতি নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের বাড়াচ্ছে। ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ধর্ষণের শাস্তি সর্বোচ্চ মৃত্যুদ- নিশ্চিত করতে হবে। সেটা কেবল আইন প্রণয়ন করে নয়, আইনের বাস্তবায়ন থাকতে হবে।

বরিশাল উদীচীর সভাপতি সাইফুর রহমান মিরণের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, শিশু সংগঠক খেলাঘর জেলার সাবেক সভাপতি জীবন কৃষ্ণ দে,  টিআইবির উদ্যোগে গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শাহ সাজেদা, উদীচী কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি অ্যাড. বিশ^নাথ দাস মুনশী, বরিশাল নাটক সভাপতি কাজল ঘোষ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি জেলা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক দুলাল মুজমদার, খেলাঘর বরিশাল জেলার সভাপতি অধ্যাপক নজমুল হোসেন আকাল, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিম-লীর সদস্য আজমল হোসেন লাবু, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সভাপতিম-লীর সদস্য শুভংকর চক্রবর্তী, উন্নয়ন সংগঠক রণজিৎ দত্ত, গণফোরাম বরিশাল জেলা সভাপতি অ্যাড. হিরণ কুমার দাস মিঠু, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু, উদীচী বরিশালের সাধারণ সম্পাদক স্নেহাংশু বিশ্বাসসহ অনেকে।