বরিশালে পশুর হাটে ক্রেতা কম, বিক্রেতারা ভয়ে

আসন্ন ঈদুল আজহার ঈদকে সামনে রেখে বরিশাল জেলা ও নগরীর স্থায়ী ও অস্থায়ী কিছু পশুর হাট জমে উঠলেও ক্রেতা সংকট দেখা গেছে। তবে আগামী বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার পশুর হাটগুলো আরো বেশি জমে উঠবে এবং ক্রেতাদরে আনাগোনাও বাড়বে বলে আশা করছেন বিক্রেতা ও হাটের ইজারাদাররা।
সোমবার (৪ জুলাই) বিকাল ৫ টার দিকে বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার গুয়াচিত্রা স্থায়ী পশুরহাটে সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদ-উল-আজহার আর ৫ দিন বাকি থাকতেই পশু-বিক্রেতারা ১ লাখ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা দামের ষাঁড় বাজারে তুলেছেন। তার মধ্যে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ অঞ্চলের পশুর সংখ্যাই বেশি দেখা যায়। এছাড়া স্থানীয় খামাড়ীদের ষাঁড়ও দেখা যায় বাজারে। তার মধ্যে ৭০-৮০ হাজার থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের ষাঁড় রয়েছে।
বাজারের গরু বিক্রেতা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, 'এক কেজি খড়ের দাম ৫০ টাহা, এক কেজি ভুসির দাদ ৪৫ টাহা, এইয়া গরুরে খাওইয়া উপযুক্ত দাম পাইনা। একটা গরুর পিছে এক লাখ টাহা খরচ কইরা দাম পাই ৭০ হাজার টাহা। চালান পামু কই? বর্তমানে বাজারে কোনো কেনা-বেচা নাই। এহন অনেক লছে আছি। তাছাড়া, ক্রেতারা এহনো বাজারে আওয়া ধরে নাই'।
অন্য এক বিক্রেতা বলেন, 'গুহাচিত্রা বাজারে যে গরু ১ লাখ ৫০ হাজারে কেনা, হেডা ১ লাখ ২০ হাজার টাহা বেচা-কেনা হইতেছে। আবার যে গরুর দাম ১ লাখ, হেডা বিক্রি হইতেছে ৮০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা। এই গুহাচিত্রা বাজারে গরুর দাম সস্তা যাইতেছে। আমি কুষ্টিয়া দিয়া ৮টি গরু আনছি বিক্রির জন্য। একটার দাম পাইতেছি না। টাকা লইছি সুদে। এহন যা দেখতেছি জমি বেইচ্চা টাহা শোধ করা লাগবে'। এ বাজারে কুষ্টিয়া থেকে ২০টি আকর্ষণীয় ষাঁড় নিয়ে আসা মন্টু বেপারী বলেন, 'এ পর্যন্ত আমি ৩টি ষাঁড় বিক্রি করেছি। যার দাম পেয়েছি ১ লাখ ৬০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকার মধ্যে'।
গুহাচিত্রা বাজারের ইজারাদার মো. মোর্শেদ আলম বলেন, 'এই বাজারে কুষ্টিয়া এবং ঝিনাইদহ থেকে গরুগুলো বিক্রির জন্য আনা হয়। তবে প্রতিবছরের তুলনায় দাম ঠিকাছে। কিন্তু বর্তমানে ক্রেতা কম। হয়তো মানুষের টাকা পয়সায় সমস্যা আছে, কারণ করোনা মহামারিতে অনেকের নানান সমস্যা হইছে। এছাড়া আগামী বৃহস্পতিবার বাজারে কিছু ক্রেতা আসতে পারে। এখনও অনেকে বেতন পায়নি, ছুটি কাটাতে বাড়িতে আসতে পারে নি। তবে আমরা আশা করি ওই দিন কিছু বেচা-বিক্রি হতে পারে'।
তিনি আরো বলেন, 'আমাদের এই গুহাচিত্রা বাজারে গরু বিক্রির খাজনা ধরা হয়েছে গরু প্রতি ১ হাজার টাকা। এতে অনেক বিক্রেতা ও ক্রেতারা খুশি। এখন দুটি ভাগে বাজার সাজানো হয়েছে। স্থানীয়দের গরু বিক্রির জন্য আলাদা। এছাড়া দূর থেকে আসা ও বড় ব্যবসায়ীদের জন্য আলাদা শেড করে দেওয়া হয়েছে'।
এদিকে জেলার ১০ উপজেলা এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় ২৩টি স্থায়ী হাটের পাশাপাশি ঈদ উপলক্ষে এ পর্যন্ত ইজারা দেওয়া হয়েছে ৩৩টি।