বরিশালে পৈত্রিক সম্পত্তি রক্ষায় দুই শিশু সন্তানসহ অবস্থান কর্মসূচি

বরিশালে পৈত্রিক সম্পত্তি রক্ষায় দুই শিশু সন্তানসহ অবস্থান কর্মসূচি

বরিশালের উজিরপুরে পৈত্রিক সম্পত্তি রক্ষায় দুই শিশু সন্তানসহ দিনভর অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে একটি পরিবার। উজিরপুর মৌজায় ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পন ট্রাইব্যুনালে’ বিচারাধীন মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রেকর্ডীয় সম্পত্তির শ্রেণি পরিবর্তন ও পুকুর ভরাট বন্ধের দাবিতে প্রখর রোদে ওই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে কল্যাণ চন্দ্র দে।

সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রখর রোদে বরিশাল নগরীর সদর রোডের অশি^নী কুমার হলের সামনে উজিরপুর উপজেলার বাসিন্দা ও স্থানীয় সাংবাদিক কল্যাণ চন্দ্র দে তার দুই শিশু সন্তান নিয়ে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

স্বাস্থবিধি মেনে কল্যাণ চন্দ্রের সঙ্গে অবস্থান কর্মসূচিতে ছিলেন তার দুই সন্তান উজিরপুর শেরেবাংলা বালিকা বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী অর্পিতা রানী চন্দ্র এবং ছেলে উজিরপুর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণির ছাত্র অংকুশ চন্দ্র দে। 

কল্যাণ চন্দ্র দে জানান, উজিরপুর বাজার সংলগ্ন এলাকায় তার দাদা প্রমথ নাথ চন্দ্রের এসএ রেকর্ডীয় ১ একর ৬২ শতাংশ জমি রয়েছে। ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত ওই জমির খাজনা পরিশোধ করেন কল্যাণের বাবা দেবতোষ চন্দ্র দে। কিন্তু ওই জমি ভিপি সম্পত্তি না হওয়া সত্ত্বেও উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রহিম মাস্টার, মুক্তিযোদ্ধা সেকেন্দার আলী হাওলাদার, সাবেক কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সালাম খান ও জাতীয় পার্টির নেতা মুজিবুর রহমান খানসহ ১০জন ব্যক্তি গোপনে ডিসিআর কেটে জমি ভোগ দখলের পায়তারা করেন। কিন্তু তাদের বাঁধার মুখে প্রতিপক্ষ জমি দখলে নিতে পারেনি। ২০১২ সালে সরকার অর্পিত সম্পত্তির যে গেজেট প্রকাশ করে সেখানে এই জমি ‘ক’ গেজেটভুক্ত হয়। পরে কল্যাণ চন্দ্রের পরিবার ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পন ট্রাইব্যুনালে’ ওই জমি অবমুক্ত করার মামলা করেন। এই মামলা এখনও ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন। এই অবস্থায় গতকাল সোমবার সকাল থেকে ডিসিআর মূলে বালু ভরাট শুরু করে প্রতিপক্ষের লোকজন। প্রাথমিক বাঁধায় তারা দখল ও বালু ভরাট বন্ধ না করায় বাধ্য হয়ে তিনি দুই সন্তান নিয়ে নগরীর অশি^নী কুমার হলের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

অবস্থান কর্মসূচি শেষে তিনি দুই শিশু সন্তান নিয়ে জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দারের সঙ্গে দেখা করে পুরো ঘটনা অবহিত করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিরোধীয় ওই জমি দখল কিংবা বালু ভরাট কাজ বন্ধ রাখার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। 

উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রণতি বিশ^াস বলেন, দুই শিশু সন্তানসহ কল্যাণ চন্দ্রের অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে অবগত হয়েছেন জেলা প্রশাসক। তার নির্দেশে গতকাল বিকেলে ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পন ট্রাইব্যুনালে’ বিচারাধীন মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই জমি দখল কিংবা বালু ভরাট কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।