বাংলা টাউন থেকে শেষ বিদায় আবদুল গাফফার চৌধুরীকে

বাংলা টাউন থেকে শেষ বিদায় আবদুল গাফফার চৌধুরীকে

জাতীয় পতাকায় মোড়ানো হলো আবদুল গাফফার চৌধুরীর মরদেহ। তারপর হিমঘর থেকে মরদেহের কফিন বের করে নিয়ে আসলেন ব্রিকলেন ফিউনারেল সার্ভিসের ব্যবস্থাপক পারভেজ কোরেশী ও শওকত আহমেদ। সাথে ছিলেন সাংবাদিক আহাদ চৌধুরী বাবু এবং আবদুল গাফফার চৌধুরীর সবচেয়ে বিশ্বস্ত জামাল খান।

অসুস্থ হওয়ার পর গত এক দশকে আবদুল গাফফার চৌধুরীকে পূর্ব লন্ডনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আনা-নেওয়া করতেন এই জামাল খান। তার হাত দিয়ে বাংলা টাউন থেকে শেষ বিদায় দেওয়া হয় আবদুল গাফফার চৌধুরীর মরদেহের কফিনকে। ব্রিটেনের বাংলা টাউন যা বাংলাদেশের প্রতীক, এখানে সড়কের নাম, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম লেখা রয়েছে বাংলায়। লন্ডনের মাটিতে দু’পাশে ছড়িয়ে থাকা বাংলা বর্ণমালার ভেতরে দিয়ে চলে গেল একজন কিংবদন্তী লেখক ও সাংবাদিকের শেষ যাত্রা

আগামীকাল শুক্রবার (২৭ মে) বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে মরদেহ পৌঁছবে। বিমানের মরদেহ পাঠানোর আনুষ্ঠানিকতায় ২৪ ঘণ্টা আগে মরদেহ দিতে হয় এয়ারপোর্টে। মরদেহ বাংলাদেশে পৌছঁবে শনিবার (২৮ মে)। সেখানে স্ত্রীর কবরের পাশে মীরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে আবদুল গাফফার চৌধুরীকে দাফন করা হবে।

১৯৭৪ সালে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশ ও সহায়তায় এসেছিলেন ব্রিটেনে। ৪৮ বছর পর সেই বঙ্গবন্ধু কন্যার তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের পতাকা ঘেরা হয়ে ফিরছেন বাংলাদেশে। মরদেহ বাংলাদেশে পাঠানোর পুরো ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে যুক্তরাজ্যস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের তত্ত্বাবধানে।

কান্না জড়িত কণ্ঠে জামাল খান বলছিলেন, আমার জীবনের কষ্টের স্মৃতি হয়ে থাকবে আজকের দিন। একই সাথে আমি সৌভাগ্যবানও, আমি গাফফার ভাইয়ের শেষ জীবনে তাঁর সাথে ছিলাম পাশে ছিলাম, আজ শেষ বিদায় আমার হাতের উপর দিয়ে হলো।

সাংবাদিক আহাদ চৌধুরী বাবু বলেন, তিনি ছিলেন ৫৬ হাজার বর্গমাইল ছাড়িয়ে বিশ্ব বাঙালির গৌরব। আজ এই তৃতীয় বাংলা প্রতিষ্ঠায় উনার অবদান কেউ ভুলবে না।

সাংবাদি সাঈম চৌধুরী বলেন, আটাশি বছরে মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত তিনি ছিলেন পুরোমাত্রায় সৃষ্টিশীল। মননে মগজে তখনও তিনি পরিপূর্ণ তরুণ। কী বিস্ময়কর স্মরণশক্তি! যেন ইতিহাস তাঁর কাছে বশ মেনে ছিল। নিজ চোখে দেখা অতীতকে পোষা পাখির বুলির মতো তিনি আশ্চর্য দক্ষতায় আত্মস্থ করে রেখেছিলেন। আর এ কারণে জীবনে তেমন‌ করে শ্রেণিকক্ষে ক্লাস না নিয়েও আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী ছিলেন বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইতিহাসের শিক্ষক।