বাকেরগঞ্জে ইউপি সদস্যকে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা

বাকেরগঞ্জে ইউপি সদস্যকে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় একটি হত্যা মামলাকে কেন্দ্র করে ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মামুনকে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষ। উপজেলার ৬ নম্বর ফরিদপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মামুনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারী বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। তার শরীরে ১৯টি কোপের আঘাত রয়েছে। আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠিয়েছেন বরিশালের চিকিৎসকরা।

বৃহষ্পতিবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে বরিশাল থেকে মটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে গোলাম সরোয়ার সবুজের নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত মামুনকে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে জখম করে।

আহত মামুন ৬ নম্বর ফরিদপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।

মামুনের স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, এক সময়ের জাতীয় পার্টি নেতা, বর্তমানে আওয়ামী লীগের সমর্থক সন্ত্রাসী গোলাম সরোয়ার সবুজের নেতৃত্বে বারেক মোল্লা, মহিউদ্দিন মোল্লা, সোহেল মোল্লা, রনি মোল্লা, মানিক মোল্লাসহ অনেকে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে জখম করে মামুনকে। তার অবস্থা শংকটাপন্ন। এর আগেও একাধিকবার মামুনের ওপর হামলার চেষ্টা করেছে সবুজ।

আহত মামুনের ছোট ভাই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল ইসলাম বলেন, একটি হত্যা মামলায় গোলাম সরোয়ার সবুজের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় একাধিকবার সবুজ মামুনকে আক্রমন করেছে। সবশেষ গতকাল বৃহষ্পতিবার মামুন বরিশাল থেকে বাড়ি ফিরছিল। মটরসাইকেলে ফরিদপুর ইউনিয়নের ভাতশালা বাজারের পশ্চিম পাশে পৌঁছালে মামুনের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায় সবুজ ও তার দলবল। এসময় তারা মামুনকে চাপাতি ও দা দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কোপাতে থাকে। মামুনের ডাকচিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলে সবুজ তার দলবল নিয়ে সেখান থেকে সটকে পড়ে। আশঙ্কাজন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সন্ধ্যায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ডাক্তারা বলেছে মামুনের শরীরে ১৯টি কোপের আঘাত রয়েছে।

হাসপাতালে মামুনের বাবা আবদুল মালেক হাওলাদার অভিযোগ করেন, মামুনকে কোপাচ্ছে শুনে আমরা সেখানে ছুটে যাই। মামুনকে না পেয়ে পাশে একটি বাড়িতে ঢোকার সময় সবুজের সহযোগী বাকের মোল্লা আমার হাতের ওপর কোপ দেয়। আমার  কব্জির হাড় পর্যন্ত আঘাত লেগেছে। আমরা আমার বড় ছেলে ইউপি সদস্য মামুনের সমস্ত শরীরের কোপের দাগ।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের অধ্যাপক ডা. নাজিবুল হক বলেন, বাকেরগঞ্জের এক রোগী আশঙ্কাজনক অবস্থায় সার্জারী বিভাগে ভর্তি হয়। তাঁর শরীরে অনেকগুলো ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। গুরুতর অবস্থা হয়েছে চোখের কোনে আঘাত এবং পায়ের রগ কেটে গেছে। এ ছাড়া হাড়ও কেটেছে। আশঙ্কজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

এব্যাপারে বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম বলেন, একটি হত্যা মামলা নিয়ে গোলাম সরোয়ার সবুজ এবং ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা মামুনের মধ্যে বিরোধ চলছিল। ওই বিরোধের জের ধরেই গতকাল সবুজের নেতৃত্বে মামুনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। গুরুতর অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুনেছি তাকে না কি ঢাকায় পাঠিয়েছে চিকিৎসকরা।

উল্লেখ্য, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দিন আহম্মেদকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গোলাম সরোয়ার সবুজ এবং ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম মামুন বিপরীত মেরুতে অবস্থন নেয়। তখন থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে একধিকবার হামলার ঘটনাও ঘটেছে।