বানারীপাড়ায় উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগে কানুনগো ও অফিস সহকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

বানারীপাড়ায় উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগে কানুনগো ও অফিস সহকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

বানারীপাড়া ভূামি অফিসের কর্মকর্তা কানুনগো নন্দলল চাকমা, অফিস সহকারী মনির হোসেন ও সৈয়দকাঠী ভূমি অফিসের উপ-সহকারী মিলন শরীফের বিরুদ্ধে উৎকোচ নিয়ে ভুয়া কাগজে জমি পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ওই অভিযোগে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে।

গতকাল রোববার জেলা প্রশাস এস এম অজিয়র রহমান বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়।
লিখিত আবেদনে অভিযোগ করা হয়, বানারীপাড়া উপজেলার আউয়ার এলাকায় বেল্লাল মাঝি নামের এক ব্যক্তির স্বত্ব দখলীয় সম্পত্তি ভূয়া কাগজে আর্থিক সুবিধা নিয়ে বিবাদীর নামে করিয়ে দিতে চেষ্টা চালান বানারীপাড়া ভূমি কার্যালয়ের কানুনগো নন্দলল চাকমা, অফিস সহকারী মনির হোসেন ও ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. মিলন শরীফ। তারা প্রথমে আদালতের নির্দেশ মোতাবেক জমির স্বত্ব বেল্লাল মাঝির পক্ষে আছে জানিয়ে তর কাছ থেকেও ৯৪ হাজার টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন।

বেল্লাল মাঝি জানান, গত ২ নভেম্বর আদালতের নির্দেশে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে কানুনগো নন্দলল চাকমা, অফিস সহকারী মনির হোসেন ও ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. মিলন শরীফ বিবাদী দেলোয়ার হোসেন  ও আবুল হোসেন গংদের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহণ করে একটি অসত্য মিথ্যা রিপোর্ট উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার বরাবর দাখিল করেন। ভূমি কর্মকর্তা উক্ত রিপোর্ট আদালতে প্রেরণ করেন। যার ফলে জমির সকল কাগজপত্র থাকা সত্বেও বেল্লাল মাঝি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এর প্রতিকার চেয়ে বেল্লাল মাঝি রোববার জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন।

আবেদনকারী বেল্লাল মাঝি উল্লেখ করেছেন, ২০০৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি এবং ২০১৯ সালের ১৬ এপ্রিল দুই দফায় বেল্লাল মাঝি ৫৪.৫০ শতাংশ জমি লেহাজ উদ্দিনের পূত্র হাবিবুর রহমানের কাছ থেকে সাবা রেজিষ্ট্রি দলিল মূলে ক্রয় করেন। যাহার দলিল নং-৩০৩ এবং ৫৯৫।

জমি ক্রয় করার পর থেকে বেল্লাল মাঝি জমি ভোগ দখলে আছেন। পরবর্তীতে তার প্রতিবেশী দেলোয়ার হোসেন ও আবুল হোসেন গংরা ওই জমি দখল করার চেষ্টা চালায়। পরে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে শালিস বৈঠক হয়। উক্ত শালিস বৈঠকে ১নং বিবাদী দেলোয়ার হোসেন একটি ভূয়া মিউটেশন দাখিল করেন। যাহার কেস নং ৫০৪/৯২-৯৩(১৫০ধারা) এবং খতিয়ান নং ২৮৮ তারিখ দেখানো ১৯৯৩ সালের ৪ অক্টোবর।

ওই ভূয়া মিউটেশন ও খতিয়ানের বিরুদ্ধে বেল্লাল মাঝি বানারীপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। যাহার সি.আর মোং নং ১১২/২০২০ (বানারীপাড়া), ধারাঃ দঃ বিঃ আইনের ৪২০/৪৬৭/৪৬১/৪৭১/১০৯। আদালত উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা বানারীপাড়াকে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দিতে বলেন। উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা মনোনীত তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ অন্যান্য কর্মচারীরা বেল্লাল মাঝির কাগজপত্র দেখে সন্তুষ্ট হন। এরপরও বেল্লাল মাঝির পক্ষে রিপোর্ট দেওয়ার কথা বলে ৯৪ হাজার টাকা দাবি করেন। বেল্লাল মাঝি ওই টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মনোনীত ওই তদন্তকারী কর্মকর্তারা বিবাদীর সঙ্গে যোগসাজসে অতিরিক্ত আর্থিক সুযোগ নিয়ে ভূমি কর্মকর্তা বরাবরে মিথ্যা রিপোর্ট দাখিল করেন। ওই রিপোর্টই ভূমি কর্মকর্তা আদালতে প্রেরণ করেছেন। এর প্রতিকার চাইছেন বেল্লাল মাঝি।