বিদেশি ব্যাংকে অর্থ পাচারকারীদের তালিকা দেওয়ার নির্দেশ

সুইস ব্যাংকসহ বিদেশি ব্যাংকে অর্থ পাচারকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা ৬ মার্চের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) এই সময়ের মধ্যে পানামা ও প্যারাডাইস পেপার্স কেলেঙ্কারিতে নাম আসা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে অনুসন্ধানের অগ্রগতি জানিয়ে হলফনামা আকারে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
রবিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
গত ২৬ জানুয়ারি বিএফআইইউ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পক্ষ থেকে পানামা ও প্যারাডাইস পেপার্স কেলেঙ্কারিতে নাম আসা ৬৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা এবং তাদের মধ্যে ১০ ব্যক্তি–পরিবারের বিষয়ে গৃহীত ব্যবস্থার তথ্য উল্লেখ করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় রাষ্ট্রপক্ষ। ওই কেলেঙ্কারির বিষয়ে ৬১ ব্যক্তি ও ৭টি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতার তথ্যসংক্রান্ত সম্পূরক প্রতিবেদন আজ আদালতে দাখিল করে দুদক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও বিএফআইইউর প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল কাইয়ুম খান, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস।
শুনানিতে সম্পূরক প্রতিবেদন তুলে ধরে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, পানামা ও প্যারাডাইস পেপার্সে যাদের নাম এসেছে, তাদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ চলছে। এখনো মামলা হয়নি।
রিটের পক্ষে আইনজীবী আবদুল কাইয়ুম খান বলেন, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে পানামা ও প্যারাডাইস পেপার্স প্রকাশের পর যে তালিকা দেওয়া হচ্ছে, তা সংযুক্ত করে রিট আবেদনের সঙ্গেই দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
একপর্যায়ে রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে আদালত বলেন, মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্সের মাধ্যমে তথ্য আনার ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? দুদকের আইনজীবী কোথায়? এমএলএআরের (মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট) মাধ্যমে বিদেশ থেকে কী কী তথ্য নিয়ে এসেছেন? যে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়েছেন, এগুলো পানামা ও প্যারাডাইস পেপার্স লিকে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয়েছে।
তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, বিভিন্ন পত্রিকায় আসা তথ্যগুলো সংগ্রহ করে এমএলএআরের মাধ্যমে ফরেন ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (এফআইইউ) কাছে রিকোয়েস্ট পাঠানো হয়েছে। গত পাঁচ বছরে যতগুলো রিকোয়েস্ট পাঠানো হয়েছে, তার তথ্য দেওয়া হয়েছে। পাঁচ বছরের পাঠানো ৮০১টি রিকোয়েস্টের মধ্যে ১১৯টি তারা গ্রহণ করেছে। কেলেঙ্কারির তথ্য যখন পত্র–পত্রিকায় প্রকাশ হচ্ছে, তখনই রিকোয়েস্ট পাঠানো হচ্ছে। এদের তথ্য ও তালিকা ধরেই বিএফআইইউর কাজ করছে।
রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে আদালত বলেন, সুইস ব্যাংকসহ দেশের বাইরে যারা টাকা রাখেছে, তাদের ব্যাপারে কিছু বললেন না। তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এমএলএআর পাঠানো হয়েছে। সুইস ব্যাংক থেকে নাম উদ্ধার করা অনেক কঠিন বিষয়। এ নিয়ে বিএফআইইউ চেষ্টা করছে।