বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও ভ্যাকসিন সরবরাহ হবে

বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও ভ্যাকসিন সরবরাহ হবে

করোনার ভ্যাকসিন বাংলাদেশে এলে সরকারি হাসপাতালগুলোর পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।

রোববার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা এবং ভ্যাকসিন’ বিষয়ক আলোচনা সভায় তিনি একথা জানান। বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) এ সভার আয়োজন করে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদন দিলে প্রথম ধাপেই বাংলাদেশ তা পাবে। সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালের জন্যও ব্যবস্থা হবে।’

মন্ত্রী আরো বলেন, ‘প্রথমদিকে করোনার প্রতিকার সম্পর্কে কেউ জানতো না, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও চিকিৎসা পদ্ধতি অনেকবার পরিবর্তন করেছে। তখন বলা হলো- ভেন্টিলেটর অনেক লাগবে, সেভাবে লাগেনি। সেন্ট্রাল অক্সিজেন, হাই ফ্লো ক্যানোলা প্রয়োজন ছিল, ল্যাবের প্রয়োজন ছিল। একটি ল্যাব থেকে ১১৮টি ল্যাব হয়েছে, এখন ১৭ হাজার পর্যন্ত টেস্ট হচ্ছে।’

করোনায় নতুন করে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বাড়ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘হঠাৎ করে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বাড়তে শুরু করেছে। এর মূল কারণ হলো- ‘সবাই বেপরোয়া হয়ে চলছি। আমরা বেশি কনফিডেন্ট হয়ে গেছি। কয়েকদিন আগে কক্সবাজারে লাখ লাখ মানুষ দেখেছি। এভাবেই সংক্রমণের হার বেড়ে যায়।’


‘তাই সচেতনতা বাড়াতে হবে। এ কারণে জরিমানা করা হচ্ছে। ডেঙ্গু বাড়ছে, একসঙ্গে এসব মোকাবিলা করা জটিল, তবে এদিকে নজর রাখতে হবে’ যোগ করেন মন্ত্রী।

উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের অবস্থানের তুলনা করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে ইউরোপ-আমেরিকায় দেখেন, পাশের দেশ ভারতে দেখেন। উন্নত দেশে প্রতি ১০ লাখে হাজারের মতো মারা গেছে। আমাদের এখানে ৪৫-৪৮ এর মতো। আমাদের অর্থনীতি গ্রোথ রেট ধরে রেখেছে, অনেক দেশ মাইনাসে চলে গেছে। একটি মানুষও না খেয়ে মরেনি। কোনো উন্নয়ন থেমে নেই। শুধু শিক্ষা পুরোপুরি করতে পারিনি, এখন অনলাইনে নেয়া হচ্ছে।’

‘শীতকালে বিভিন্ন অনুষ্ঠান বেড়ে যায় সে কারণে করোনাও বেড়ে যেতে পারে’ বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

সরকারি-বেসরকারিভাবে মিলে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করা সম্ভব জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আগে হাসপাতালে বেড বেশি ছিলো না, সেন্ট্রাল অক্সিজেন ছিলো না, এখন হয়েছে। ওষুধের অভাব হয়নি, চিকিৎসক নার্সরা এখন অনেক বেশি ট্রেন্ড। বেড রেডি করে ফেলতে হবে, টেস্টের ব্যবস্থা ভালো করতে হবে। টেলিমেডিসিন বাড়াতে হবে।’

‘এসময় বেসরকারি হাসপাতালে ১০ হাজার বেডের মধ্যে কোভিড রোগীর জন্য ১২০০ রয়েছে। ২০ শতাংশে উন্নতি করা ও আইসিইউ বাড়ানোর’ পরামর্শ দেন মন্ত্রী।


স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, ‘করোনায় সরকারের যথাযথ পদক্ষেপের কারণে মৃত্যুহার অন্য দেশের তুলনায় কম। তবে, কোনো মৃত্যুই কাম্য হতে পারে না। মনে রাখতে হবে, দেশ বাঁচলে তবেই আমরা বাঁচবো। বেসরকারি হাসপাতাল তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে আশা রাখি।’

বিপিএমসিএ সভাপতি এমএ মুবিন খান বলেন, ‘হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা বাড়ানো দরকার। যদি পরিস্থিতি খারাপ হয় তাহলে পাটনারশিপ হতে পারে। অথবা সরকার যেভাবে পছন্দ করে। অনেকে অনলাইন কনসালটেশন নিচ্ছেন, এটি খুবই কার্যকর। না হলে সকল রোগী হাসপাতাল মুখী হলে হিমশিম খেতে হতো। তাই অনলাইন মেডিকেল বোর্ড করা হচ্ছে। ক্যাম্পেইনের কাজও হাতে নেয়া হয়েছে। সিটিস্ক্যান মেশিনসহ করোনায় অপরিহার্য যন্ত্রপাতি ডিউটি ফ্রি করা যেতে পারে। এন্টিজেন ও এন্টিবডি কিট আমদানির সুযোগ দিলে রোগীরা বিশাল রিলিফ পেতে পারে।’