বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করলেন ব্রিটিশ যুবরাজ

বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করলেন ব্রিটিশ যুবরাজ

ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের ছেলে যুবরাজ উইলিয়াম তার ওপর শারীরিক আক্রমণ করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন রাজার ছোট ছেলে প্রিন্স হ্যারি। প্রিন্স হ্যারির স্মৃতিকথা ‘স্পেয়ার’ প্রকাশিত হওয়ার আগে তার এই অভিযোগের কথা ছেপেছে ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান। আত্মজীবনীতে বড় ভাই প্রিন্স অব ওয়েলস উইলিয়ামের বিরুদ্ধে তাকে মারধর করে শারীরিকভাবে জখম করার অভিযোগ এনেছেন হ্যারি।

বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে গার্ডিয়ান জানায়, প্রিন্স হ্যারির স্ত্রী মেগান মার্কেলকে নিয়ে উইলিয়ামের সাথে এক বাকবিতণ্ডার সময় ওই মারধরের কথা বলা হয়েছে বইয়ে। হ্যারির অভিযোগ, অভিনেত্রী মেগান মার্কেলকে বিয়ে করায় তাদের দুই ভাইয়ের সম্পর্ক ভেঙে যায়।

এই বাক-বিতণ্ডার এক পর্যায়ে উইলিয়াম তার কলার ধরে তাকে মাটিতে ফেলে দিয়েছিলেন বলে বইয়ে লিখেছেন হ্যারি। এতে তার গলার একটি নেকলেস ছিঁড়ে যায় বলেও দাবি করেছেন তিনি।

এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে প্রিন্স অব ওয়েলসের সরকারি বাসভবন কেনসিংটন প্যালেস।

প্রিন্স হ্যারির স্মৃতিকথা ‘স্পেয়ার’ প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে আগামী মঙ্গলবার। তবে প্রকাশের আগে কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই এর একটি কপি হাতে পাওয়ার কথা দাবি করেছে দ্য গার্ডিয়ান।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালে লন্ডনে প্রিন্স হ্যারির বাসভবনে উইলিয়ামের কিছু মন্তব্যের পর দুই ভাইয়ের মধ্যে কথা-কাটাকাটির সূত্রপাত হয়।

প্রিন্স উইলিয়াম মেগানের সাথে হ্যারির বিয়ের সমালোচনা করেছিলেন বলে বইয়ে লিখেছেন হ্যারি। উইলিয়াম মেগানকে ‘বেয়াড়া’, ‘বেয়াদব’ ও ‘ক্ষতিকর’ বলে মন্তব্য করেছিলেন বলে অভিযোগ হ্যারির।

এসব অভিযোগকে ‘সংবাদমাধ্যমের শেখানো বুলি’ হিসেবে দেখতেন হ্যারি। উইলিয়াম ‘সংবাদমাধ্যমের বক্তব্যকে তোতাপাখির মতো পুনরাবৃত্তি করে যাচ্ছিলেন’ বলে বইয়ে অভিযোগ করেছেন হ্যারি।

তবে এ ঘটনাকে ‘মারামারি’ বলতে নারাজ দ্য গার্ডিয়ান। কেননা বইয়ে হ্যারির ভাষ্য অনুযায়ী, উইলিয়াম তাকে পাল্টা আক্রমণ করার আমন্ত্রণ জানালেও তাতে সাড়া দেননি তিনি।

হ্যারি লেখেন, উইলিয়াম ‘আমার কলার চেপে ধরে, গলার চেইন ছিঁড়ে ফেলে এবং...মেঝেতে ছিটকে ফেলে দেয়’। এতে পিঠে জখম হয় হ্যারির।

বইটির নাম এসেছে রাজকীয় ও অভিজাত পরিমণ্ডলের একটি পুরোনো কথা থেকে। সেটি হলো প্রথম ছেলে সিংহাসন, ক্ষমতা ও সম্পদের উত্তরাধিকারী আর দ্বিতীয়জন অতিরিক্ত (স্পেয়ার)। যা কিছু ঘটে, যে প্রথমে জন্ম নেয়, তারই জোটে।

সাম্প্রতিক সময়ে রাজপরিবারের সাথে বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলেছেন রাজপরিবার ছাড়া প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মার্কেল। এ নিয়ে নির্মিত নেটফ্লিক্স তথ্যচিত্র ‘হ্যারি এন্ড মেগান’-এ নানা বিষয় নিয়ে খোলাখুলি নিজেদের বক্তব্য জানিয়েছেন তারা।

২০২০ সালে হঠাৎ করেই রাজপরিবার ছেড়ে হ্যারি-মেগান দম্পতি আমেরিকায় পাড়ি জমান। বিবাদ মিটিয়ে রাজপ্রাসাদে ফেরার ইচ্ছা নেই বলেও জানিয়েছেন হ্যারি।