ভাষা শহীদদের স্মরণে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর্যতার মধ্যে দিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষা শহীদদের স্মরণে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সম্মিলিত অংশগ্রহণে দিবসটিতে বিভিন্ন আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়
২১শে ফেব্রুয়ারির সূযোদয়ের পর মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো ছাদেকুল আরেফিন ভাষা শহীদদের শোকাবহে কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো প্রতীক ধারণের মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন। সকাল ৯টায় মাননীয় উপাচার্যের পশ্চাদ্বর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল স্তরের লোক বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গন থেকে মেীন পদযাত্রা করে। সাড়ে ৯টায় পদযাত্রা শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পন করা হয়। পুষ্পস্তবক অর্পন করেন মাননীয় উপাচার্য মহাদয়, সকল(২৪) বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী সংগঠন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো।
পুষ্পস্তবক অর্পন শেষে মাননীয় উপাচার্য ড. মো ছাদেকুল আরেফিন তার বক্তব্যে বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই বাঙালি জাতিসত্ত্বার উন্মেষ ঘটেছিল। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে সাংবিধানিকভাবে বাংলা হলো রাষ্ট্রভাষা সুতরাং দেশের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন করতে হবে’। বিশেষত তরুণ প্রজন্ম যেন শ্রদ্ধাভরে বাংলা ভাষার চর্চা করে এবং এটির মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে অবতীর্ণ হবে বলে তিনি তরুণদের প্রতি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এসময় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মরণে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কীর্তনখোলা হলে একটি আলোচনা সভারও আয়োজন করে।
২১শে ফেব্রুয়ারির গুরুত্ব ও গাম্ভীর্যের তাৎপর্য ব্যাখায় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়্যারমেন শরীফা উম্মে শিরীনা জানান, ‘১৯৫২সালে ভাষা আন্দোলনে লড়াই ও শহীদ হওয়ার ফলে আজ আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারছি’। এছাড়াও তরুণেরা বিশেষত যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসক্ত তাদেরকে ভাষা শহীদদের গুরুত্বে বাংলা ভাষার বিকৃতি রোধ করতে আহ্বান জানান।
স্মরনীয় যে, ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ১৪৪ ধারা অমান্য করে রাজপথে মিছিল করে। ফলে পুলিশ মিছিলে গুলি চালায়। এতে শহীদ হয় আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, আবদুস সালামসহ অনেকেই। এই অবিস্মরনীয় ত্যাগের ফলে ১৯৫৪ সালে ৯ই মে গণপরিষদ অধিবেশনে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি মেলে। স্বাধীনতার দীর্ঘদিন পরে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে। এরপর থেকে জাতিসংঘের সদস্যদেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় আন্তর্জাতিকভাবে মাতৃভাষা দিবস পালিত হচ্ছে।