বরিশালে একটি ডায়াগনেস্টিক সেন্টারে মাকে ডাক্তার দেখাতে এসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছেলে সুমন শীল (৩৫)-এর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর সদর রোডের বেলভিউ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটে। রাত ১২টায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানের চিকিৎসক ডা. নাজমুল সাকিব সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত সুমন শীল ভোলার চরফ্যাশন এলাকায় জ্যাকব টায়ার সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা এবং বিমল চন্দ্র শীেেলর ছেলে। সুমন জ্যাকব টাওয়ার এলাকায় একটি সেলুন পরিচালনা করতেন।
এ ঘটনায় কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করেছেন নিহতের পরিবার। বেলভিউ ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ প্রভাব বিস্তার করে এই ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
নিহতের মামা অমল শীল জানান, তার বোন দিপালী রানী দির্ঘদিন ধরে বাত ব্যাথায় ভুগছেন। দিপালী রানীকে ডা. অমিতাভ সরকারকে দেখানোর জন্য তার ছেলে সুমন গত রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর সদর রোডের বেলভিউ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। বেলভিউর প্রধান ফটকের কলাপসিবল গেটে হাত দিয়ে ষ্পর্শ করে ভেতরে প্রবেশের সময় বিদ্যুত স্পৃষ্ট হন মা দিপালী রানী। এ সময় সঙ্গে থাকা ছেলে সুমন মাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিতে গিয়ে নিজে বিদ্যুত স্পৃষ্ট হয়। মা বেঁচে গেলেও সুমন বিদ্যুত স্পৃস্ট হয়ে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়।
নিহতের মা দিপালী রানীর অভিযোগ, সুমন আহত হয়ে পড়ে থাকার পর বেলভিউর লোকজন তাকে একটি কক্ষে নিয়ে প্রায় ১ ঘন্টা আটকে রাখে। এ সময় বেলভিউর কোন একজন চিকিৎসকও তার শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা কিংবা চিকিৎসা দেয়নি। সুমনের স্বজনদেরও ধারে কাছে যেতে দেওয়া হয়নি। রাত পৌনে ১২টার দিকে বেলভিউ কর্তৃপক্ষ একটি এ্যাম্বুলেন্সযোগে (লেগুনা) সুমনকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে প্রেরণ করে। হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. নাজমুল সাকিব রাত ১২টা ৫ মিনিটে সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন।
নরসুন্দর সুমন শীলের অনাকাংখিত মৃত্যুর ঘটনায় বেলভিউ কর্তৃপক্ষের অবহেলা এবং দায়িত্বহীনতাকে দায়ী করেছেন তার মা দিপালী রানী ও মামা অমল শীল।
বেলভিউ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপক মো. নঈমুল হক মাসুদ জানান, সুমন শীলের ঘটনাটি তাদের কম্পাউন্ডের মধ্যে নয়, বাইরে হয়েছে। সে বিদ্যুত স্পৃস্ট হয়নি। সে পড়ে গিয়ে মারা গেছে। আহত হওয়ার পর বরং বেলভিউ কর্তৃপক্ষ তাকে মেডিকেলে পাঠিয়েছে। মেডিকেলে পাঠানো বাবদ কর্তৃপক্ষ ২ হাজার টাকা নেয়নি। তারা কোন দালালের খপ্পড়ে পড়তে পারে বলে দাবি করেন তিনি।
বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. নুরুল ইসলাম জানান, সুমন শীলের মৃত্যুর ঘটনায় বেলভিউ কর্তৃপক্ষের কোন অবহেলা কিংবা গাফেলতি ছিলো কি না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। নিহতের লাশের ময়না তদন্ত করে এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে বলে তিনি জানান।