মাজেদের লাশ উত্তোলন করে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার ঘোষণা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত ) আবদুল মাজেদের দাফন করা লাশ সোনারগাঁ থেকে অপসারণের দাবি জানিয়েছে সোনারগাঁয়ের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠননের লোকজন।
অনতিবিলম্বে এ লাশ অপসারন করা না হলে নিজেরাই লাশ তুলে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার ঘোষনা দিয়েছে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা।
রবিবার ভোরে সোনারগাঁ উপজেলার শম্ভুপুরা ইউনিয়নের হোসেনপুর এলাকায় খুনি মাজেদের শশুরবাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে গোপনে তার লাশ দাফন করা হয়। সকালে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা তীব্র প্রতিবাদ জানাতে থাকে।
নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সাংসদ আব্দুলাহ আল কায়সার, সোনারগাঁ আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, যুগ্ম আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম, সোনারগাঁ আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালামসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সোনারগাঁয়ে খুনি মাজেদের লাশ দাফনের তীব্র প্রতিবাদ জানান।
এক পর্যায়ে করোনা প্রার্দুভাবের কারণে দেওয়া লকডাউন উপেক্ষা করেই বেশ সংখ্যক আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী শম্ভুপুরা ইউনিয়নের হোসেনপুর এলাকায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে তারা এখান থেকে মাজেদের লাশ অপসারনের জন্য প্রশাসনকে আলটিমেটাম দেন। বিক্ষোভকারীরা জুতা প্রদর্শনের মাধ্যমে তাদের প্রতিবাদ জানান। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা পরে কবর থেকে লাশ উত্তোলনের জন্য কবর খোড়তে শুরু করেন। তবে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কবর খোড়া থেকে তারা বিরত হন।
এ সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ সদস্য ও আওয়ামীলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান মাসুমের নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাসেল মাহামুদ, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সোনারগাঁ উপজেলা শাখার সভাপতি শেখ এনামুল হক বিদ্যুৎ, সোনারগাঁ থানা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি মেহের নেগার সোনিয়া, শম্ভুপুরা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি মোতালেব মিয়া, সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন, সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খায়রুল ইসলাম বিজয় প্রমূখ।
বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা পরে সোনারগাঁও প্রেসক্লাবে তাৎক্ষনিক সংবাদ সম্মেলন করেন। কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ সম্পাদক এএইচ এম মাসুদ দুলাল বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীর কবর সোনারগাঁয়ে থাকতে দেওয়া হবে না। এ লাশ সোনারগাঁয়ে রাতের আধারে কবর দেওয়ায় সোনারগাঁবাসী লজ্জিত, স্তম্ভিত। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীর লাশ তার গ্রামের মানুষ গ্রহন করেনি, আমরা কেন এ কলঙ্কের দায় নেবো। মাজেদের লাশ সোনারগাঁ থেকে প্রত্যাহার চাই।
তিনি আরো বলেন, প্রশাসনের কাছে আমরা তার লাশ প্রত্যাহার বা অন্যত্র সরিয়ে নিতে কথা বলেছি। আমরা প্রশাসনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এ লাশ প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম বলেন, আমরা যদি আগে জানতাম, সোনারগাঁয়ে খুনি মাজেদের লাশ আসবে তা হলে আমরা শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে হলেও প্রতিহত করতাম। যে কুলাঙ্গকারের জন্ম ভোলায়, ভোলাবাসী তার দায় বহন করতে চায় না, তাহলে আমরা সোনারগাঁবাসী কেন এ দায় নিব। সোনারগাঁ থেকে তার লাশ উত্তোলন করা না হলে আমরা আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে এ লাশ অপসারণ করে নদীতে ভাসিয়ে দেবো।