রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘আদিবাসী’ গ্রাফিতি বাতিলের প্রতিবাদে মানববন্ধন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ও রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) আদিবাসী শিক্ষার্থীরা ‘আদিবাসী’ শব্দ সম্বলিত গ্রাফিতি বাতিলের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন। বুধবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ‘রাবি ও রুয়েট আদিবাসী শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনের পর শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন, যা ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। মিছিলটি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়, যেখানে তারা আদিবাসী ছাত্রজনতার ওপর হওয়া হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।
মানববন্ধন থেকে আদিবাসী শিক্ষার্থীরা কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন, যার মধ্যে রয়েছে—
নবম ও দশম শ্রেণির বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দের গ্রাফিতি পুনর্বহাল করা।
আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি নিশ্চিত করা।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা।
সমতল আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করতে হবে।
মানববন্ধনে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিগুলো জানান, যেমন—
আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি চাই’,
‘আমাদের আত্ম পরিচয় নির্ধারণ করার অধিকার চাই’,
‘পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হবে’ ইত্যাদি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জুস্মিতা সরেন বলেন, “পাঠ্যপুস্তকে ‘আদিবাসী’ শব্দ সম্বলিত গ্রাফিতি বাতিলের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আদিবাসীদের সংস্কৃতি ও স্বাতন্ত্র্য তুলে ধরার জন্য আমরা আজ এখানে সমবেত হয়েছি। একটি উগ্র সংগঠনের দাবির ভিত্তিতে গ্রাফিতি বাতিল করা হয়েছে, যা অনুচিত।”
বিজয় চাকমা বলেন, “আমরা বৈচিত্র্যময় ও সমতল আদিবাসীদের জন্য ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে চাই। আদিবাসীদের ইতিহাস ও সংস্কৃতি স্বীকৃতি নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। বৈষম্যহীন একটি বাংলাদেশ গড়তে আমাদের এই প্রতিবাদ অপরিহার্য।”
মানববন্ধনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রুয়েটের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।