রাশিয়া-ইউক্রেন সমঝোতা চেয়ে পুতিনকে ফোন চীন প্রেসিডেন্টের

রাশিয়া ও ইউক্রেনের সমঝোতা চেয়ে ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি চীন পিং। চীনের সরকারি টেলিভিশন সিসিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
শুক্রবারের ওই ফোনালাপের বিষয়ে টেলিভিশন চ্যানেলটির প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে শি বলেছেন, ইউক্রেনের পরিস্থিতি দ্রুতই বদলে যাচ্ছে...এবং চীন এ পরিস্থিতিতে চায় রাশিয়া ও ইউক্রেন সংকট নিরসনে দ্রুত সমঝোতায় পৌঁছাবে।
পুতিনের সঙ্গে আলাপে শি বলেন, ঠান্ডা যুদ্ধের মানসিকতা ত্যাগ করা খুব প্রয়োজন, সব দেশের নিরাপত্তা উদ্বেগকে গুরুত্ব দেওয়া এবং একে সম্মান করা ও আলোচনার মাধ্যমে একটি ভারসাম্যপূর্ণ, কার্যকর, টেকসই ইউরোপীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গঠন করা গুরুত্বপূর্ণ।
চীনা সংবাদমাধ্যমের বরাতে পুতিন ফোনালাপে রাশিয়ার 'বিশেষ সামরিক অভিযান' শুরুর কারণ ব্যাখ্যা করেন। তিনি শিকে বলেন, ন্যাটো এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার নিরাপত্তার উদ্বেগকে দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষা করেছে'।
তিনি শিকে আরো বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্তুত।
শি বলেন, চীন সহযোগিতামূলক এবং টেকসই নিরাপত্তার জন্য সব দেশের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক। জাতিসংঘকে কেন্দ্রে রেখে আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি রক্ষার পক্ষে চীন।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় ভোর ৫টার দিকে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালায়। এখন পর্যন্ত হামলায় ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে ইউক্রেন তথ্য দেয়।
সর্বশেষ রাশিয়ার সেনাবাহিনী ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে প্রবেশ শুরু করছে বলে খবর। তাদের প্রতিহতের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউক্রেন সেনাবাহিনী।
বৃহস্পতিবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র হুয়া চুনিং বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে কমপক্ষে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ১ হাজার টন অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাঠিয়েছে। সে সময় যদি সব পক্ষ শান্তি আলোচনায় এগিয়ে আসত, ইউক্রেন ইস্যুর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা করত, একে অপরের নিরাপত্তা উদ্বেগকে সম্মান করত, বিষয়টি সুনজরে দেখত, পরিস্থিতি নমনীয় করার জন্য যুক্তিসংগত ও সঠিক উপায়ে সমস্যার সমাধান করত, তাহলে কি এখনকার ঘটনা ঘটত?’
হুয়া চুনিং বলেন, যুদ্ধের উসকানি দেওয়ার যেকোনো কাজের বিরোধিতা করে চীন। উত্তেজনা না বাড়াতে সব পক্ষকে বোঝানোর পাশাপাশি উসকানি না দেওয়ার জন্য শুরু থেকেই বেইজিং দায়িত্বশীল মনোভাব নিয়েছে।
হুয়া চুনিং বলেন, এই উত্তেজনার জন্য যে দায়ী (কালপ্রিট), তার এখন ভেবে দেখা উচিত, অন্যদের দোষারোপ না করে কীভাবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের মাধ্যমে এই আগুন নেভানো যায়।
ইউক্রেন ইস্যুতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় হুয়া চুনিং বলেন, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করার বিষয়ে কী করতে হবে, তা চীনকে বলার যোগ্যতা যুক্তরাষ্ট্রের নেই।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘এমনকি আজও, এখনো আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার তথাকথিত মিত্রদের কাছ থেকে বাস্তবিক হুমকির সম্মুখীন হচ্ছি। তারা চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে স্বেচ্ছাচারিতামূলক হস্তক্ষেপ করছে। তারা জিনজিয়াং, হংকং, তাইওয়ান ইস্যুতে চীনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তাকে ক্ষুণ্ন করে চলছে।’
পিআর/ডিআর