রাষ্ট্রপতি অর্থের অপচয় করছেন: জাফরুল্লাহ

রাষ্ট্রপতি অর্থের অপচয় করছেন: জাফরুল্লাহ

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সংলাপের নামে অর্থের অপচয় করছেন বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় মানবাধিকার সমিতি আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

‘নাসিক নির্বাচনে কিশোর গ্যাংদের উত্থান, গডফাদার কারা? সিদ্ধিরগঞ্জের মুক্তিনগরে কিশোর গ্যাং খ্যাত সন্ত্রাসীদের কর্তৃক জাতীয় মানবাধিকার সমিতির নারায়ণগঞ্জ জেলা কমটির নির্বাহী সদস্য মোসা. মোরশেদা বেগম এবং তার পরিবারের ওপর হামলার প্রতিবাদে' এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আজকে আইন অনুসারে বা বিচার অনুসারে মোহাম্মদ ইমান আলী (আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি) চিফ জাস্টিস হওয়ার কথা। উনি আপনাদের (সরকার) কথা এবং আপনাদের হুকুম নাও মানতে পারেন। উনি আইন মেনে চলতেন। তাই উনাকে আপনারা দেন নাই। উনি ছুটিতে গেছেন। কিন্তু উনারও উচিত ছিল পদত্যাগ করা।’

‘মাননীয় রাষ্ট্রপতি আপনাকেও এসবের জবাব দিতে হবে। আপনার কাঁধে বন্দুক রেখে হাসিনা ফায়ার করছেন। মনে করবেন না যে, বিচারটা কেবল আমার প্রধানমন্ত্রীর হবে। আপনারও বিচার হবে। এই অনাচারের বিচার হবে। সংলাপের নামে রাষ্ট্রপতি অর্থের অপচয় করছেন। আপনার কিছুই করার ক্ষমতা নাই’ যোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বলেন, ‘আপনার আমলে বড় ব্যর্থতা গণতন্ত্র কবরে গেছে, ভোট হয় না। লোকে ভোট দিতে পারে না, গণতন্ত্রহীন। আপনার অবস্থা এত খারাপ যে, পশ্চিম দিগন্তে আপনার বিরুদ্ধে ডঙ্কা বাজতে শুরু করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আপনি (প্রধানমন্ত্রী) উন্নয়নের কথা বলেছেন। যে কাজ করা যেতো ১০ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকায়। সেটা ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছেন! সর্বোচ্চ অনাচার আর দুর্নীতি।’

‘আজকে বোধ হয় আপনার বোঝার সময় এসেছে, আপনার পদত্যাগ করা উচিত। এসব জায়গায় আপনার বোন শেখ রেহানাকে যুক্ত করুন। আপনি শেখ রেহানাকে কোনো কাজই দিচ্ছেন না। এটা দিয়ে দেন। অনন্ত তাকে মানবাধিকার কমিশনের দায়িত্ব দেন। তাকে কাজ শিখতে দেন’ যোগ করেন ডা. জাফরুল্লাহ।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, ‘রাশিয়া টিকার জন্য আহ্বান করেছিল, মাত্র ৭ ডলারে। কিন্তু আপনারা কিনেছেন ১৪ ডলার দিয়ে। কত দিয়ে কিনছেন সংসদকে আপনি জানান নাই। সংসদকে অপমান করেছেন।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বলেন, ‘এসবের জন্য আপনার মনে হয়, আপনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। আপনার বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন। আপনি বিশ্রাম নেন, রেহানাকে দায়িত্ব দেন।’

‘তাছাড়া আপনি বরং একটা কাজ করতে পারেন, যেভাবে ইতিহাসে অমর হবেন। যে গণতন্ত্র আপনার সময়ে কবরে গেছে, তাকে কবর থেকে উঠিয়ে আনেন। আপনি বরং সেই দায়িত্বটা নেন’ যোগ করেন তিনি।

ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘যদি শেখ মুজিবকে সম্মান করতে চান এবং বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা করতে চান, তাহলে আজকে উচিত হবে একটা জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠিত করা। জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠিত করে যে অনাচারগুলো হচ্ছে, সেগুলোর পরিবর্তন করা। কারণ, জাতীয় সরকার ছাড়া এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। জাতীয় সরকার ছাড়া এখানে কোনোক্রমেই নির্বাচন গণতান্ত্রিক হবে না এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না।’

এ সময় বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, কেবল হাসিনা খারাপ! আপনারা তার বিরোধিতা করে লাভ নাই। কি কি পরিবর্তন করবেন, সেই ঘোষণা দেন। কারণ আপনারা একলা কিছুই করতে পারবেন না। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় নামুন।’

জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসার সভাপতিত্বে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।