শুরুতেই যে কাজগুলো করবেন বাইডেন

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী জো বাইডেন দায়িত্ব নেওয়ার পর শুরুতেই যে পদক্ষেপগুলো নেবেন, ইতোমধ্যেই তার পরিকল্পনা ঘোষণা দিয়েছেন।
বিবিসি বাংলা জানায়, এই পদক্ষেপগুলোর মধ্যে করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবিলা সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবে।
বাইডেন শিবির থেকে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাসের পরীক্ষা অনেক বেশি বাড়িয়ে দেওয়া হবে এবং মার্কিন নাগরিকদের মাস্ক পরতে বলা হবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির পরিবর্তন
জানুয়ারিতে দায়িত্ব নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেওয়া নীতিমালাগুলোকে যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার করবেন বাইডেন।
ইতোমধ্যে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সঙ্গে মিলে একটি ট্রানজিশন ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন জো বাইডেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেওয়া বেশকিছু বিতর্কিত নির্বাহী আদেশ, যার জন্য কংগ্রেসের অনুমোদন দরকার হয় না, সেগুলোকে আগের অবস্থানে নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন জো বাইডেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বের হয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাতে আবারো যোগ দেবে দেশটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে সরে গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেই সিদ্ধান্তও বদলাবেন ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট।
এ ছাড়া যে সাতটি দেশের নাগরিকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তা প্রত্যাহার করা হবে।
পাশাপাশি বারাক ওবামার সময়কার কিছু নীতি পুনর্বহাল করবেন বাইডেন। বিশেষ করে শিশু বয়সে যারা কোনো বৈধ কাগজ ছাড়া অভিবাসী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া।
বাইডেন তার বিজয়ী ভাষণে বলেন, ‘আমাদের প্রতিপক্ষকে শত্রু হিসেবে বিবেচনা করা বন্ধ করতে হবে।’
মহামারি মোকাবিলায় পরিকল্পনা
ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ উপেক্ষা করে করোনাভাইরাস মহামারিকে যেভাবে হালকাভাবে দেখা হয়েছে বলে সমালোচনা রয়েছে।
বিশেষ করে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্বকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। যদিও বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু যুক্তরাষ্ট্রেই। জো বাইডেন ট্রাম্প প্রশাসনের এসব নীতিমালায় ব্যাপক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
বিজয়ী ভাষণেই একটি বিশেষজ্ঞ দল তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন বাইডেন, যারা করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় নেতৃত্ব দেবেন। তিনি মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে চান।
এছাড়া সকল মার্কিন নাগরিকদের জন্য নিয়মিত বিনামূল্যে করোনাভাইরাসের পরীক্ষার ব্যবস্থা এবং সকলের জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক নির্ভরযোগ্য তথ্যভিত্তিক নির্দেশিকা প্রচলন করতে চান।
বর্ণবৈষম্য মোকাবিলা
জো বাইডেন এমনই এক সময়ে দায়িত্ব নেবেন যখন যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকদের একের পর এক মৃত্যুকে ঘিরে দীর্ঘ সময়ে সহিংস বিক্ষোভে চলেছে।
ট্রাম্পের সময়ে বর্ণভিত্তিক বিভেদ বৃদ্ধি এবং শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের উত্থান হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
জো বাইডেন বর্ণভিত্তিক বৈষম্য উচ্ছেদকে তার প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ভিত হিসেবে তৈরি করতে চান। সরকারি তহবিল ব্যবহার করে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে বাসস্থান ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে চান তিনি।
কৃষ্ণাঙ্গ, লাতিন ও অন্যান্য জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পদের বৈষম্য দূর করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যাতে আরও জোরালোভাবে কাজ করে, ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট সেটি নিশ্চিত করতে চান।
পুলিশ বাহিনীর জন্যও কিছু পরিবর্তন পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিশেষ করে কোনো অপরাধীকে আটক করার সময় কিছু শক্তি প্রদর্শনের পন্থা। পুলিশ প্রশাসনে সংস্কারের জন্য একটি কমিশন করার কথাও ভাবছেন বাইডেন।
ভোরের আলো/ভিঅ/০৯/২০২০