সারাদেশে বিদ্যুতের বকেয়া বিল সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা

সারা দেশে গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ বিভাগের বকেয়া বিলের পরিমাণ আট হাজার ৫৫৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে বেসরকারি খাতে বকেয়া ছয় হাজার ৯৬২ কোটি ৭৪ লাখ। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়সহ সরকারি বিভিন্ন দফতরের কাছে বকেয়া ৭৪৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। আধা সরকারি খাতের কাছে বকেয়া রয়েছে ১৯৭ কোটি ১১ লাখ টাকা। সরকারি খাতের মধ্যে বকেয়ার ৬৯৪ কোটি ৯২ লাখ টাকাই স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে।
বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের কার্যপত্র থেকে গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বকেয়া বিলের এ তথ্য জানা গেছে।
কমিটি সরকারি খাতের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিবকে সচিব কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য বলেছে।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মো. শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, ‘বকেয়া বিল আদায়ে আইনি যা যা পদক্ষেপ আছে, তা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের সচিবকে আমরা বলেছি, সচিব কমিটির বৈঠকে যেন সংশ্লিষ্ট সচিবদের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন।’
স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে বকেয়া বিল বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আসলে বিদ্যুৎ বিলের টাকা তারা অন্য উন্নয়ন কাজে ব্যবহার করে। কিন্তু বকেয়া বিলের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা পড়লে জনগণের উন্নয়নেই যে ব্যবহার হয় এটা বুঝতে হবে।’
কমিটির বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ বিল বকেয়া আছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কাছে। তাদের বকেয়া বিলের পরিমাণ তিন হাজার ৭৯৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা। সবচেয়ে কম বকেয়া ওজোপাডিকোর, ৪৪৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
কমিটির বৈঠকে বিদ্যুতের প্রিপ্রেইড মিটার দ্রুত স্থাপনের সুপারিশ করা হয়।
এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি বলেন, ‘প্রিপেইড মিটারে বিদ্যুতের অপচয় এবং চুরি দুটোই কম হয়। বিল বকেয়া থাকার বিষয়টিও থাকে না। এজন্য দ্রুত আমরা এই মিটার স্থাপন করার জন্য বলেছি।’
বৈঠকে জনগণের সেবা প্রাপ্তি সহজ করার পাশাপাশি হয়রানি রোধে মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
এছাড়া কমিটি বিদ্যুতের সিস্টেম লস কমানোর জন্য মন্ত্রণালয়কে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করে।
কমিটি প্রকল্পের অপচয় রোধ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কার্যক্রম সম্পন্ন করার সুপারিশ করে। কমিটির সভাপতি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘একসময় বিদ্যুত খাতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ ছিল দুই হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এখন পাওয়া গেছে ২৬ হাজার কোটি টাকা। এর বাইরে উন্নয়ন সহযোগীদের বরাদ্দ আছে। আমরা বলেছি, বড় প্রকল্পে যাতে বড় অপচয় না হয়। প্রায়ই গণমাধ্যমে খবর আসে। বড় বড় প্রকল্পে বড় ধরনের অনিয়ম হচ্ছে। বিদ্যুতে যাতে এটা না হয়, সেদিকে নজর দিতে বলা হয়েছে।’
শহীদুজ্জামান সরকারের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মো. আবু জাহির, মো. নূরুল ইসলাম তালুকদার, মো. আছলাম হোসেন সওদাগর এবং নার্গিস রহমান অংশ নেন।