সার্ক নেতাদের ভিডিও কনফারেন্স রোববার

সার্ক নেতাদের ভিডিও কনফারেন্স রোববার

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দক্ষিণ এশিয়ার জন্য উপযুক্ত কর্মকৌশল ঠিক করতে রোববার বিকেলে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হবেন সার্কভুক্ত দেশের নেতারা।

বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সার্কভুক্ত দেশের নেতারা করোনাভাইরাস থেকে নাগরিকদের সুরক্ষার কৌশল নিয়ে কথা বলবেন।

শনিবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল শুক্রবার টুইটে করোনাভাইরাসের কৌশল ঠিক করতে সার্কভুক্ত দেশের নেতাদের ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেয়ার আহ্বান জানান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সার্কভুক্ত দেশের নেতারা সেদিনই নরেন্দ্র মোদির প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে সম্মতি জানান। একমাত্র পাকিস্তান আজ শনিবার ওই কনফারেন্সে যুক্ত হওয়ার কথা জানিয়েছে।

শুক্রবার টুইটারে দেয়া বার্তায় মোদি লিখেছেন, ‘করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য একটি শক্তিশালী কৌশল তৈরি করতে সার্কভুক্ত দেশগুলোর নেতৃত্বের কাছে আমি প্রস্তাব করছি।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী টুইটে আরো লিখেন, ‘আমরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আমাদের নাগরিকদের সুস্থ রাখার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করতে পারি। একসঙ্গে আমরা বিশ্বের সামনে একটি উদাহরণ তৈরি করতে এবং একটি স্বাস্থ্যকর গ্রহ গড়ে তুলতে অবদান রাখতে পারি।’

প্রায় আড়াই মাস আগে গত বছরের শেষ দিন চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর বিশ্বব্যাপী তা ছড়িয়ে পড়ে। ইতিমধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা-সার্কের সদস্য আট দেশেই এ ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে। এর মধ্যে ভারতে সবচেয়ে বেশি ৭৪ জনের মধ্যে এ রোগ ধরা পড়েছে, সেখানে মৃত্যু হয়েছে একজনের। বৃহস্পতিবার রাতে কর্নাটকের কালবুর্গি জেলায় এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

পরিস্থিতির অবনতি এড়াতে ভারত অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিদেশিদের ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে, যা শুক্রবার রাত থেকেই কার্যকর হয়।

প্রসঙ্গত, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৪৩৬ জনে। ১৩২টি দেশে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৪৫ হাজার ৮১০ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৭২ হাজার ৫৩০ জন।

শনিবার (১৪ মার্চ) পরিসংখ্যান ভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ডোমিটারস এ তথ্য জানায়।

ওয়েবসাইটে জানানো হয়, বর্তমানে এ ভাইরাসে আক্রান্ত ৬৭ হাজার ৮৪৪ জন মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের মধ্যে ৬ হাজার ৮২ জনের অবস্থা সঙ্কাটাপন্ন আর ৬১ হাজার ৬০১ জনের অবস্থা স্থিতিশীল।

চীনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে এলেও ইউরোপে এটি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ভাইরাসে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে ইতালি। এখন পর্যন্ত ইতালিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ২৬৬ জনের।

এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ২৫০ জনের, যা ইতালিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে একদিনের হিসাবে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর খবর। এছাড়া দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৬৬০ জন মানুষ।

ইরানেও করোনা পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে। সেখানে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৫১৪ জনে পৌঁছেছে। এ ছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৩৬৪ জন।

দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ জনে। এ ছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা আট হাজার ৮৬ জনে পৌঁছেছে।