সিনহা হত্যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে র‌্যাব

সিনহা হত্যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে র‌্যাব


অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার ঘটনা সম্পর্কে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা একটি ‘পরিষ্কার তথ্যচিত্র’ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার মুখপাত্র লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ। 

বুধবার রাত ১০ টার দিকে কক্সবাজারে র‌্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। 

লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের রিমান্ড জিজ্ঞাসাবাদ, প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য, আলামতসহ সংশ্লিষ্ট সামগ্রিক কিছু নিয়ে এই মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। রিমান্ডে থাকা আসামিরা চাঞ্চল্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। ৪ জন পুলিশ সদস্য এবং ৩ জন সাক্ষীর রিমান্ড শেষ হয়েছে।  বৃহস্পতিবার তাদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করার পর পরবর্তীতে তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদের রিমান্ডে আনার প্রয়োজন মনে করলে পুনরায় তাদের রিমান্ডে আনার জন্য আবেদন হবে।

প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করে তদন্তের কার্যক্রম আরও এগিয়ে নেওয়া হবে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের দেওয়া তথ্য আপাতত প্রকাশ করা যাবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

তিনি বলেন, হত্যা মামলাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর, গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। তাই অত্যন্ত সতর্কতা, পেশাদারি ও গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এটি তদন্ত কার্যক্রমের ইতিবাচকভাবে এগোচ্ছে। ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে ধরনের খবর প্রকাশিত হয়েছে, সকল ধরনের খবর, ফোনালাপ তদন্তকারী কর্মকর্তা আমলে এনেছেন। 

তিনি আরও বলেন, এই হত্যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামি সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও নন্দদুলাল রক্ষিতসহ গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের রিমান্ড জিজ্ঞাসাবাদ, প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য, আলামতসহ সংশ্লিষ্ট সামগ্রিক কিছু নিয়ে এই মামলাটি তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে চলছে।

আশিক বিল্লাহ বলেন, রামু থানায় নীলিমা রিসোর্ট থেকে উদ্ধার ২৯টি উপকরণ জিডিমূলে সংরক্ষিত আছে। সিনহা এবং শিপ্রার ব্যবহৃত সকল ব্যক্তিগত ডিভাইস, ২৯ টি উপকরণ তদন্তকারী কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার গ্রহণ করবেন বলে আমরা আশা করছি।

এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার মুখপাত্র বলেন, গত ২৫ তারিখ থেকে থেকে ৬ আগস্ট তারিখ  তারিখ পর্যন্ত সময়ের টেকনাফ থানার সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালত সেসব উপকরণ তদন্তকারী কর্মকর্তার হেফাজতে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে টেকনাফ থানা থেকে সিসিটিভি ফুটেজ চাওয়া হলে কারিগরি ত্রুটির কারণে ফুটেজ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ। এ সময় পুলিশ সিনহার সঙ্গে থাকা সিফাতকে আটক করে কারাগারে পাঠায়। পরে রিসোর্ট থেকে শিপ্রাকে আটক করা হয়। দুজনই বর্তমানে জামিনে মুক্ত। ওই ঘটনায় ওসি প্রদীপসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা এবং পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষী প্রথমে কক্সবাজার জেলা কারাগার ও পরে আদালতের ৭ দিনের রিমান্ড আদেশের প্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব হেফাজতে রয়েছে।

সর্বশেষ বাংলাদেশ আর্মড পুলিশের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে আটকের আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব। কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তামান্না ফারাহ প্রত্যেক আসামিকে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।