সিরিজ জয়ে বাংলাদেশ

বড় লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে তাই বাংলাদেশ পড়ে গিয়েছিল চ্যালেঞ্জের মুখে। তবে সেই চ্যালেঞ্জ উতরে ম্যাচ ও সিরিজ দুটিই নিজেদের করল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।
হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে রবিবার ১৯৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৫ উইকেটে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। রান তাড়ায় টাইগারদের এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয়। ২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২১৫ রান তাড়ায় জয়টি এই তালিকার শীর্ষে।
অলরাউন্ড নৈপুণ্যে এদিন টাইগারদের জয়ের নায়ক সৌম্য সরকার। ব্যাট হাতে যিনি ৪৯ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৬৮ রানের ইনিংস খেলেন। বল হাতে ২ উইকেট নিয়ে ছিলেন সবচেয়ে সফল। তাই ম্যাচসেরাও তিনি। সিরিজ সেরার পুরস্কারও পেয়েছেন এই ২৮ বছর বয়সী ক্রিকেটার।
সৌম্য সরকারের ফিফটির সঙ্গে সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও শামীম হোসেনের ছোট্ট ইনিংসগুলো গড়ে দেয় জয়ের ভিত। ৪ বল হাতে থাকতেই জয় নিশ্চিত হয় টাইগারদের। সুবাদে ২-১ এ সিরিজ পকেটে পুড়ে বাংলাদেশ।
এর আগে একমাত্র টেস্টে জয়ের পর তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ দেয় টাইগাররা।
বড় রান তাড়া করতে নেমে এদিন দ্রুতই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈমকে হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। তৃতীয় ওভারে ব্লেসিং মুজারাবানির শিকার হওয়ার আগে ৭ বলে ৩ রান করেন তিনি। বাংলাদেশের রান তখন ২.২ ওভারে ২০।
তিনে নেমে সাকিব আল হাসান সৌম্য সরকারকে সঙ্গে নিয়ে জিম্বাবুয়ে বোলারদের ওপর পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন। এই জুটি ৩২ বলে ঠিক ৫০ রান যোগ করে।
লুক জঙ্গুয়ের করা অষ্টম ওভারে পর পর দুটি ছক্কা হাঁকালেও ওই ওভারেই ফেরেন সাকিব। ১৩ বলে ২৫ রান করেন তিনি ১ চার ও ২ ছক্কায়।
এরপর মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে আরেকটি দারুণ জুটি সৌম্যর। তৃতীয় উইকেটে এই দুজন যোগ করেন ৩৫ বলে ৬৩ রান। জঙ্গুয়ের ১৪তম ওভারে সৌম্য ফিরলে যে জুটির পতন হয়।
সৌম্যর বিদায়ের পর আফিফ নেমেই প্রথম বলে ছক্কা হাঁকান। তার ৫ বলে ২ ছক্কায় করা ১৪ রান পরিস্থিতির দাবি মেটায় দারুণভাবে। আফিফ ফেরেন ১৬তম ওভারে ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বলে।
শেষ ৪ ওভারে ৪০ রান প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। মুজারাবানির করা ১৮তম ওভারে টানা তিন বলে বাউন্ডারি উপহার দেন শামীম হোসেন। তার আগের ওভারে মাহমুদউল্লাহ একটি করে ছক্কা ও চার হাঁকান। তাতে শেষ ২ ওভারে বাংলাদেশের জয়ের প্রয়োজন দাঁড়ায় ১৩ রানের।
১৯তম ওভারে মাহমুদউল্লাহ অবশ্য ফিরে যান। ২৮ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৩৪ রান করেন তিনি।
বাকি পথটা শামীমের ব্যাটে নিরাপদেই পাড়ি দেয় টাইগাররা। ১৫ বলে ৬ চারে অপরাজিত ৩১ রান করেন মাত্র দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা ২০ বছর বয়সী বাঁহাতি ব্যাটার।
এর আগে বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে খেলেছেন ওয়েসলি মাধেভেরে ও রেজিস চাকাভা। শেষ দিকে রায়ান বার্লও খেলেছেন ঝোড়ো ইনিংস। সুবাদে স্বাগতিকেরা পেয়ে যায় চ্যালেঞ্জিং পুঁজি।
মাধেভেরে ৩৬ বলে ৬ চারে দলীয় সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেন। চাকাভা ২২ বলে ৬ ছক্কায় করেন ৪৮ রান। শেষ দিকে বার্ল ১৫ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত ৩১ রান করেন।
সৌম্য সরকার ৩ ওভারে ১৯ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। শরিফুল ৪ ওভারে ২৭ রান খরচায় নিয়েছেন ১ উইকেট। সাকিব ৪ ওভারে ২৪ রান খরচায় ১ উইকেট নেন।
তাসকিন আহমেদ ২ ওভারে ২৮ রান খরচা করেন। তাই পরে আর তাকে আক্রমণেই আনেননি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। সাইফউদ্দিন ৪ ওভার বল করে ৫০ রান খরচ করে পেয়েছেন মাত্র ১ উইকেট। মেহেদী হাসানের পরিবর্তে একাদশে আসা নাসুম আহমেদ ৩ ওভারে ৩৭ রান খরচ করেন।