সিলেটের সেই বস্তুটি বোমা নয়

সিলেটের সেই বস্তুটি বোমা নয়


সিলেট নগরীর চৌহাট্টায় একটি মোটরসাইকেলে রাখা বোমাসদৃশ বস্তু নিয়ে যে বোমা আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছিল অবশেষে তার অবসান হয়েছে। দীর্ঘ প্রায় ২০ ঘণ্টা র‌্যাব-পুলিশ ওই এলাকাটি ঘিরে রেখেছিল।

বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে সেনাবাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয়কারী একটি দল ওই বস্তুটি উদ্ধার অভিযান শুরু করে। বিকেল ৪ টায় তারা উদ্ধার অভিযান শেষ করেন।

এরপর প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, বস্তুটি বোমা নয়, একটি গ্রাইন্ডিং মেশিন। এটি একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্র। এটি মূলত দেয়াল কাটার কাজে ব্যবহার করা হয়।  

অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের বোমা ও বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ লে. কর্নেল রাহাত প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘গত বুধবার সন্ধ্যায় একজন পুলিশ সদস্যের মোটরসাইকেলে একটি সন্দেহজনক বস্তু দেখতে পাওয়া যায়। নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ এলাকাটি ঘিরে রাখে। এরপর পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীকে এই বস্তুটি পর্যবেক্ষণ ও পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়। সেনা সদর দপ্তর থেকে নির্দেশনা পেয়ে সেনাবাহিনীর সিলেট ১৭ পদাতিক ডিভিশনের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল এখানে আসে।

তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে এসে আমাদের পদ্ধতি অবলম্বন করেছি, পরিদর্শন করেছি। আমাদের কাছে মনে হয়েছে এটা একটি ফাইন্ডিং মেশিন। কিন্তু অধিকতর নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমরা নির্দিষ্ট কর্মপদ্ধতি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি। এরপর এটাকে মোটরসাইকেল থেকে খুলেছি।’

লে. কর্নেল রাহাত বলেন, হতে পারে ভুলবশত কেউ এটা এখানে রেখেছে অথবা পুলিশ সদস্যের মোটরসাইকেলে রেখে আতঙ্ক ছড়াতে চেয়েছে।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) জ্যোতির্ময় সরকার জানান, ঘটনাস্থল ও এর আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। কে বা কারা বস্তুটি রেখেছে, তা চিহ্নিতের চেষ্টা চলছে।  

উল্লেখ্য, গত বুধবার সন্ধ্যায় নগরীর চৌহাট্টা মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট চয়ন বড়ুয়া নিজের মোটরসাইকেল রেখে পাশের দোকানে জরুরি কেনাকাটায় যান। ১০ মিনিট পর ফিরে এসে নিজের মোটরসাইকেলে বোমাসদৃশ একটি বস্তু আটকে রাখা অবস্থায় দেখতে পান। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হলে দ্রুত ওই এলাকাটি ঘিরে ফেলা হয়। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব সদস্যরাও ঘটনাস্থলে ছুটে যান। চৌহাট্টা এলাকায় যানবাহনসহ লোকজনের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এভাবে বুধবার রাত থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত কড়া নিরাপত্তায় ছিল পুরো এলাকাটি। বড় ধরনের কোন নাশকতার চেষ্টা কি-না এ নিয়ে নগরজুড়ে চলে নানা জল্পনা। অবশেষে সেনাবাহিনীর উদ্ধার অভিযানের মাধ্যমে এই জল্পনা ও আতঙ্কের অবসান হয়েছে।