বরিশালে সুরভী- লঞ্চের স্টাফ কেবিন থেকে আঁখি আক্তার (২৯) নামে এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই কেবিনে আখির সঙ্গে থাকা পুরুষ সদস্য পলিয়ে গেছে।
আজ শনিবার আটটার দিকে ঢাকা-বরিশাল নৌপথে চলালচকারী সুরভী-৮ লঞ্চ বরিশাল নদী বন্দরে নোঙর করার পর ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
শনিবার সকাল আটটার দিকে কেবিন পরিদর্শন করতে গিয়ে বিষয়টি প্রথম নজরে আসে এক স্টাফের। তিনি বিষয়টি লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে জানায়। এরপর খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
মৃত নারী নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ আদমজী নগরের আদমজী ইপিজেডের অনন্ত অ্যাপেয়ারেল্স লিমিটেডের একজন অপারেটর ও বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাদ্রিশিবপুরের বড়পুইয়াউটা এলাকার বজলু বেপারির মেয়ে আঁখি আক্তার (২৯)।
ওই নারীর বাবা বজলু বেপারি জানান, আঁখির সঙ্গে আদমজী নগরের এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ২ বছরের এক মেয়েও আছে। তাদের দাম্পত্য সম্পর্কের টানাপড়েনে সেই সন্তান নানাবাড়ি বাকেরগঞ্জেই থাকে।
শনিবার গ্রামের বাড়িতে ভোটার কার্ডের কাজের জন্য আসার কথা ছিল মেয়ে আঁখির। শুক্রবার (১৯ জুলাই) দিনগত রাতে এমভি সুরভী-৮ লঞ্চে করে ঢাকার সদরঘাট থেকে আঁখি বরিশালের উদ্দেশে রওনা দেয়। এ সময় সে একাই থাকার বিষয়টি তিনি জানতেন। লঞ্চে ওঠার সময় একবার কথা হলেও পরবর্তীতে আর কথা হয়নি। সকালে সে যথাসময়ে বাড়িতে না এলে এবং মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেলে আঁখির সন্ধানে নামেন স্বজনরা। পরে বরিশাল লঞ্চঘাটে এসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন লঞ্চের স্টাফ কেবিন থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সুরভী লঞ্চের সুপারভাইজার মেসবাহ উদ্দিন জানান, গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) দিনগত রাতে ঢাকা থেকে নারী ও পুরুষ দুই যাত্রী ৬০০ টাকা ভাড়ায় সুরভী-৮ লঞ্চের নিচ তলার পেছনের দিকের স্টাফ কেবিনে ওঠেন। ভোরে কেবিন চেক করতে এসে ওই কেবিনের দরজা বাইরে থেকে সিটকিনি দেওয়া দেখতে পায় এক স্টাফ। পরে দরজা খুলে স্টাফরা ওই নারী যাত্রীকে শুয়ে থাকতে দেখে তাকে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কোনো সাড়া না পাওয়ায় সন্দেহ হয় স্টাফদের। পরে তারা লঞ্চ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে সুরতহাল প্রতিবেদন করতে গিয়ে আঁখি আক্তার নামে ওই গার্মেন্টস কর্মীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে আলমত পাওয়া গেছে। তার মৃতদেহ উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। আঁখির সঙ্গে থাকা যুবকের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে, লঞ্চের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সরবরাহ করা হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত ওই যুবককে আইনের আওতায় আনা ও মৃত্যুর রহস্য উন্মোচন হবে।