স্ত্রী মরদেহ হাসপাতালে ফেলে পালিয়েছে স্বামী

স্ত্রী মরদেহ হাসপাতালে ফেলে পালিয়েছে স্বামী

বরিশালে দাবিকৃত যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় ফাতেমা আক্তার (২২) নামে এক গৃহবধূকে নির্যতন ও বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার পশ্চিম চাঁদশী গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। গুরুতর অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে মারা যায় গৃহবধূ। স্বামী সহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন হাসপাতালে তার লাশ ফেলে পালিয়ে যায়।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্ত শেষে গৃহবধূর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। 

নিহত ফাতেমা আগৈলঝাড়া উপজেলার বাশাইল এলাকার গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে। তার স্বামী মো. জসিম দর্জি গৌরনদী উপজেলার পশ্চিম চাঁদশী গ্রামের সেলিম দর্জির ছেলে। 

নিহত গৃহবধূর বাবা গিয়াস উদ্দিন জানান, দুই বছর আগে তার মেয়ে ফাতেমা আক্তারের সঙ্গে জসিমের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়েতে জসিমকে দুই লাখ টাকা যৌতুক দেয় তার পরিবার। বিয়ের পর বছর না ঘুরতেই ফাতেমার কাছে মোটা অংকের টাকা যৌতুক দাবি করে জসিম ও তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এ নিয়ে ফাতেমা ও জসিমের মধ্যে বাকবিতন্ডা লেগেই থাকতো। যৌতুক না পেয়ে ফাতেমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালাতো জসিম। গত সোমবার বিকেলে যৌতুকের দাবিকৃত টাকার জন্য ফাতেমাকে বেদম শারীরিক নির্যাতন করে জসিম ও তার পরিবারের সদস্যরা। এক পর্যায়ে ফাতেমা জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তার মুখে বিষ ঢেলে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় শ্বশুড়বাড়ির লোকজন। অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন বিকেলেই তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই রাতে ফাতেমার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর পরপরই স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন হাসপাতালে লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। 

পরবর্তীতে বিষয়টি মেডিকেলের দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের জানানো হলে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে মরদেহের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়। এ ঘটনায় গৌরনদী মডেল থানায় মামলা দায়ের করার কথা বলেন ফাতেমার বাবা। 

গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. তৌহিদুজ্জামান জানান, এ বিষয়ে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।