২২ ঘন্টা পর হাসপাতাল থেকে নিঁখোজ শিশু গৃহকর্মী উদ্ধার

২২ ঘন্টা পর হাসপাতাল থেকে নিঁখোজ শিশু গৃহকর্মী উদ্ধার


নিঁখোজ হওয়ার ২২ ঘন্টা পর উদ্ধার হয়েছে ঢাকায় চিকিৎসকের স্ত্রী কর্তৃক নির্যাতনের শিকার শিশু গৃহকর্মী নিপা বাড়ৈ। শিশুটি হাসপাতাল থেকে নিঁখোজের খবর পাওয়ার পর থেকেই পুলিশ তার সন্ধানে নামে। চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতালে থেকে নিয়ে যাওয়ার কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

শনিবার ভোররাত ৪ টার দিকে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার আশোয়ার গ্রামের জনৈক বিমলের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উজিরপুর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল আহসান জানান, শিশুটি হাসপাতাল থেকে নিঁখোজের খবর পাওয়ার পর থেকেই পুলিশ তার সন্ধানে নামে। এরপর ওই শিশুটির কাকা পরিচয়দানকারী তপন বাড়ৈর মামা শশুর বিমলের বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিশুটির গ্রামের বাড়ির পাশেই তপন বাড়ৈ নামে ব্যক্তি রয়েছেন। যিনি শিশুটির সম্পর্কে কাকা (চাচা) হন, তিনিই শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়াসহ বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য শুরু থেকেই জড়িত ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে আর্থিক প্রলোভনে নির্যাতনকারীদের পক্ষ হয়ে শিশুটির সাথে অমানবিক আচরণে লিপ্ত হয়েছেন তপন বাড়ৈ। চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতালে থেকে নিয়ে যাওয়ার কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার বেলা ১১ টায় বরিশালের উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শামসুদ্দোহা তাওহিদ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তিনি জানান, বৃহষ্পতিবার দিবাগত রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত চাচা পরিচয়ে এক ব্যক্তি নির্যাতনের শিকার শিশু নিপাকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা চালান। তবে শিশুটির শারিরীক অবস্থা ভালো না থাকায় তার সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত এবং বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় পুলিশকে না জানিয়ে তাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র দিতে রাজি হয়নি। পরে ভোর ৫ টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই শিশুটি এবং তার সাথে থাকা বড় মা পরিচয়দানকারী নারীকে আর দেখা যায়নি। শিশুটির পাশের বেডের রোগীরা জানিয়েছেন, সারারাত ওই শিশুটির স্বজনদের মোবাইলে অনেক কল আসে এবং তারা সারারাত সজাগই ছিলেন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে শিশুটি নিঁখোজের ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হয়ে তিনি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। 

উল্লেখ্য গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে নির্যাতনের শিকার শিশু নিপা বাড়ৈকে উজিরপুরের উত্তর জামবাড়ি এলাকার একটি দোকানের সামনে রেখে চলে যায় জনৈক ব্যক্তি। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। শিশুটি জানায়, ঢাকার অর্থোপেডিক ও ট্রমা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সিএইচ রবিনের বাসায় ৬ মাস পূর্বে গৃহকর্মী  হিসেবে কাজ শুরু করে সে। শুরু থেকে রবীনের স্ত্রী রাখি দাস শিশুটিকে নির্যাতন করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে লোক মারফত নিপাতে গ্রামের বাড়ির এলাকায় রেখে পালিয়ে যায়।