৯০ কোটি টাকায় অ্যাপ তৈরির খবর গুজব

করোনাভাইরাসের টিকা নিবন্ধন অ্যাপ বানাতে ৯০ কোটি টাকা খরচের খবরটিকে ‘গুজব’ বলে দাবি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (এমআইএস) নতুন পরিচালক অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, অ্যাপ বানাতে ৯০ কোটি টাকা খরচের বিষয়টি স্রেফ একটি গুজব।
তিনি বলেন, আইসিটি মন্ত্রণালয় একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। তারা কেন সরকারি কাজ করে দিতে টাকা নিবে? আমি যতটুকু জানি, তারা এই অ্যাপটা আমাদেরকে বিনামূ্ল্যে করে দিচ্ছে।
সোমবার (১১ জানুয়ারি) দেশের একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যাপ তৈরিতে খরচ হচ্ছে ৯০ কোটি টাকা। এরইমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে টাকা চেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
যদিও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো থেকে জানানো হয়েছে, এ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে সংবাদমাধ্যমগুলো।
এ প্রসঙ্গে এমআইএসের সাবেক পরিচালক ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, অ্যাপটি আইসিটি মন্ত্রণালয় বিনামূল্যে তৈরি করে দিয়েছে। তবে এটার মেইন্টেনেন্স (ডোমেইন, হোস্টিং, এনআইডি ভেরিফিকেশন) বাবদ সম্ভাব্য একটা বাজেট ধরা হয়েছিল। যা প্রায় ৯০ কোটি টাকা। তবে এটা এখনো চুড়ান্ত না। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান যদি এই খরচ না নেয় তবে আর অর্থ খরচ হবে না। আবার তারা ডিসকাউন্টও দিতে পারে।
কোন কোন প্রতিষ্ঠান এ অ্যাপের সঙ্গে জড়িত এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এই মুহূর্তে মনে করতে পারছি না।’
এদিকে, অ্যাপ তৈরিতে কোনো টাকা খরচ হবে না বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, টাকা খরচের খবরটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ওই অ্যাপ তৈরি করতে কোনো টাকাই খরচ হবে না।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের একটি ডাটাবেজ সফটওয়্যার আগে থেকেই তৈরি আছে। আমরা সেই ডাটাবেজের ওপর ‘সুরক্ষা প্ল্যাটফর্ম’ তৈরি করবো। ওটাই হবে সেই অ্যাপ। আইসিটি বিভাগে কর্মরত প্রোগ্রামাররাই (ইনহাউজ প্রোগ্রামার) অ্যাপটি তৈরি করবেন। নিজেদের জনবল, অফিস, সোর্স ব্যবহার করে কাজটি করা হবে। ফলে এর জন্য কোনো টাকাই খরচ হবে না। কারণ কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অ্যাপটি তৈরির জন্য আমরা কার্যাদেশ দিইনি।
পলক বলেন, বলা হচ্ছে অ্যাপটির নির্মাণ ব্যয় ৯০ কোটি টাকা। এই টাকা কে দেবে- প্রশ্ন করেন তিনি।
তিনি বলেন, ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীরা খরচ করতে পারেন। ৯০ কোটি টাকার কেনাকাটার জন্য পারচেজ কমিটির কাছে যেতে হবে। এছাড়া এই অ্যাপ তৈরির জন্য আমরা অর্থ বিভাগ, স্বাস্থ্য অধিদফতর কারও কাছে টাকা চাইনি। ফলে অ্যাপ তৈরিতে ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ের বিষয়টি পুরোটাই মনগড়া। সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমে প্রতিবাদপত্র পাঠানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছি