‘দেশে কোরবানির গরু আমদানির প্রয়োজন পড়েনি

’
গত দুই বছরে দেশে গরু উৎপাদন বেড়েছে। দেশের আনাচে-কানাচে খামার গড়ে ওঠায় গরুর উৎপাদন চাহিদার চেয়ে বেশি। এ কারণে কোরবানির সময়ও গরু আমদানি করতে হয়নি। সম্প্রতি সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৫ম বৈঠকে এমন তথ্য তুলে ধরেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রাইসুল আলম মণ্ডল।
বৈঠকে তিনি বলেন, প্রাণিসম্পদে বাংলাদেশ অনেক সাফল্য অর্জন করেছে। গত ২ বছর কোরবানির জন্য গরু আমদানি করতে হয়নি। দেশের বিভিন্ন খামারে উৎপাদিত গরু দিয়েই চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়েছে। এ সব গরুর মাংসে দেশি গরুর মাংসের স্বাদ মেলায় এর চাহিদা বেশি। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এ নিয়ে প্রচুর গবেষণা ও এর বাস্তবায়নে কাজ করছে। ভাল জাতের ষাড় ও গাভী উৎপাদনে প্রচুর গবেষণা চলছে। দেশীয় গাভী থেকে এখন প্রায় ২৫/৩০ কেজি পর্যন্ত দুধ পাওয়া যায়।
সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু (বরগুনা-১), কমিটির সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম (বকুল) (নাটোর-১) ও বেগম নাজমা আকতার (মহিলা আসন-৪৬) উপস্থিত ছিলেন।
ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, বিভিন্ন দুর্যোগের সময় কৃষি মন্ত্রণালয় যেভাবে কৃষকদের পাশে দাঁড়ায় সেভাবে এই মন্ত্রণালয়কে গরু খামারী, মৎস্য খামারী, মৎস্যজীবীসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদের পাশে দাঁড়ালে তারা আরও স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারবে এবং উৎপাদনে উৎসাহী হবে। তিনি বন্যা বা অন্যান্য দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদেরকে আর্থিক সাহায্য ও ব্যাংক ঋণসহ অন্যান্য আর্থিক প্রণোদনা দেয়ার ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দেন।
সভায় ব্লু ইকোনমিকে রক্ষার তাগিদ দিয়ে বলা হয়, পৃথিবীর খাদ্য চাহিদার ৭ ভাগ সমুদ্রের তলদেশে রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা নিশ্চিত হওয়ায় সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষায় কমিটিকে ব্যবস্থা নিতে হবে। মাছ হচ্ছে প্রধান সামুদ্রিক সম্পদ যা আমাদেরকে রক্ষা করতে হবে।
রাইসুল আলম মন্ডল বলেন, সমুদ্রে অসংখ্য প্রজাতির মাছ রয়েছে। তবে গবেষণায় ৪৩০ প্রজাতির মাছের সন্ধান পাওয়া গেলেও খাওয়া যাবে এমন প্রজাতির মাছ নিয়ে গবেষণা চলছে। সমুদ্রে প্রায় ১২০ প্রজাতির মাছ রয়েছে যা আমরা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করছি। মা মাছ ও ডিমওয়ালা মাছ ধরা থেকে বিরত থাকার জন্য ‘নিষিদ্ধকাল’ নির্ধারণ করা হয়েছে। বছরে ৬৫ দিন মাছ ডিম দেয়। এই ৬৫ দিন মা মাছ ধরা বন্ধ রাখা গেলে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি হবে। মাছের প্রায় ৩০ প্রজাতি নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রয়েছে। সামুদ্রিক মাছ ইলিশকে প্রধান বাণিজ্যিক মৎস্য হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে এর উপর বিজ্ঞানিরা প্রচুর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এর প্রজনন প্রক্রিয়া, সময়কাল ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রয়েছে।