ডেঙ্গুর রোগের ভয়াবহ বিস্তারে উদ্বেগ প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট সকলকে সমন্বিতভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং হাসপাতালগুলোতে রোগীদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের আদেশ দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি ডেঙ্গুর পরীক্ষায় বেসরকারি হাসপাতালে ৫০০ টাকার বেশি আদায় করা হচ্ছে কি না এবং সরকারি হাসপাতালে নিয়মমতো ফ্রি তে পরীক্ষা হচ্ছে কি না তা তদারকির নির্দেশ দিয়ে আদালত বলেছেন, ডেঙ্গু রোগী ও তাদের স্বজনরা যেন কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হয়।
বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার স্বপ্রণোদিত হয়ে এ মৌখিক আদেশ দেয়।
শুনানিকালে আদালত বলেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে ফাইভ স্টার হোটেলের মতো হলে হবে না। আর যদি তাই হয় তাহলে ফাইভ স্টারের মতো সুযোগ-সুবিধাও নিশ্চিত করতে হবে।
ডেঙ্গুর পরীক্ষায় বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে গলা কাটা ফি নেওয়া হচ্ছে- এমন অভিযোগের বিষয়টি গত ২৫ জুলাই হাইকোর্টের এই বেঞ্চের নজরে আনেন আইনজীবী মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী। শুনানি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে বিষয়টি তদারকি করতে ও পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে সোমবার প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার আদালতকে জানান, ইতিমধ্যে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিদের সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের বৈঠক হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গুর পরীক্ষায় ৫০০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিনা ফিতে এই রোগের পরীক্ষা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, সকল হাসপাতালকে ডেঙ্গু রোগীদের অগ্রাধিকার দিয়ে সেবার মান, পর্যাপ্ত ওষুধ ও বেড রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্ট বলেন, ‘পৃথিবীর অনেকে দেশে দুর্যোগের সময় সবাই ভুক্তভোগীদের পাশে দাঁড়ায়। কিন্তু আমাদের এখানে কেউ কেউ পরিস্থিতির সুযোগ নিতে চায়। ডেঙ্গুর এই পরিস্থিতির সুযোগ যেন কেউ নিতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’
আদালত আরও বলেন, ‘বাচ্চাদের যেভাবে বিনা ফিতে ভিটামিন ক্যাপসুল খাওয়ানো হয় সেভাবে ডেঙ্গু পরীক্ষায় যে কীট ব্যবহার করা তা ফ্রিতে সরবরাহ করা যায় কি না তা বিবেচনা করতে বলা হয়।’
বেসরকারি স্কয়ার হাসপাতালে একজন ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় (পরে মৃত্যুবরণ করেন) মাত্র ২২ ঘণ্টায় পৌনে দুই লাখ টাকার বেশি বিলের বিষয়ে আইনজীবীরা অবগত করলে হাইকোর্ট বলে, ‘বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলোকে কোনোভাবেই ফাইভ স্টার হোটেলের মতো হতে দেওয়া হবে না। যেসব হাসপাতাল, ক্লিনিক ফাইভ স্টারের মতো বিল নেবে তারা যেন ফাইভ স্টারের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে এ বিষয়ে পরবর্তী প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ১ আগস্ট ধার্য রাখেন আদালত।