উদীচী ও বরিশাল নাটকের উদ্যোগে নজরুল জয়ন্তী পালন

উদীচী ও বরিশাল নাটকের উদ্যোগে নজরুল জয়ন্তী পালন
শনিবার (২৫ মে) ছিল সাম্যবাদী কবি, প্রেমের কবি, বিদ্রোহী কবি ও আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মজয়ন্তী। কবির জন্মদিন উপলক্ষে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ও বরিশাল নাটক আয়োজন করে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। গতকাল শনিবার ইফতারির পর নগরের উত্তর মল্লিক রোডের উদীচী ভবনে ওই অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়। বরিশাল নাটকের সভাপতি কাজল ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় কবির বর্ণিল জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অ্যাড. মানবেন্দ্র বটব্যাল, মুকুল দাস, উদীচী কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি অ্যাড. বিশ্বনাথ দাস মুনশী, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও বরিশাল নাটকের সাবেক সভাপতি আজমল হোসেন লাবু, কবি ও নাট্যকার নজমুল হোসেন আকাশ, বরিশাল নাটকের সাধারণ সম্পাদক পার্থ সারথি, উদীচী বরিশালের সাধারণ সম্পাদক স্নেহাংশু বিশ্বাস। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, কবি নজরুল ইসলাম মানুষ এবং মানবতার গান গেয়েছেন তাঁর কবিতা, গান, নাটক, গল্প উপন্যাশে। তারপরও কবিকে নিয়ে নানা বিতর্ক সৃষ্টি করেছে কবি বিদ্বেষীরা। তারা কখনো কখনো কবিকে হিন্দুর কবি, কেউ আবার মুসলমানের কবি বলে ব্যাখ্যা করতে চয়েছেন। বাস্তবে কবি গালাগালিকে গলাগলিতে পরিণত করতে হিন্দু-মুসলমানকে এক সূত্রে গাঁথার চেষ্টা করে গেছেন। তাই তিনি যেমন একদিকে শ্যামা সঙ্গীত লিখেছেন, তেমনি লিখেছেন অসংখ্য ইসলামী সঙ্গীত। একজন মানবতাবাদী কবির লেখা বন্ধ করতে ব্যাপক চেষ্টা করেছে সেই সময়ের ইংরেজ শাসকরাও। কবির বিদ্রোহী কবিতা লেখার পর তাঁকে নাস্তিক আখ্যা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কবি আজন্ম আপন মনে মানুষের কল্যাণে লিখে গেছেন। আমরা উদ্বিগ্ন হই, যখন দেখি কবির লেখা কবিতার লাইন কিংবা শব্দ পরিবর্তন করে ব্যবহার করা হয়। কবি যেমন মহাশ্মশানের কথা বলেছেন, তেমনি গোরস্থানের কথাও বলেন, মসজিদে আজানের আহ্বানের কথা বলেছেন আবার মন্দিরে কালি মায়ের কথাও বলেছেন। তিনি ধর্ম দিয়ে মানুষকে আলাদা করার পক্ষে ছিলেন না। আামাদের উচিত কবি কাজী নজরুলের চর্চা বাড়ানো। নজরুল চর্চা করতে হবে ধর্মের উর্ধ্বে উঠে। আলোচনার সভাপর উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা পরিবেশন করে কবির লেখা গান, ‘মোরা একই বৃন্তি দুটি কুসুম হিন্দু মুসল মান, মুসলিম তার নয়নমনি, হিন্দু তাহার প্রাণ’ এই গান। এরপর আবৃত্তি পরিবেশন করে আবৃত্তি শিল্পী সুজয় সেন গুপ্ত, বরিশাল নাটক পরিচালিত আবৃত্তি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে শিশু বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে সংগীত পরিবেশন করে বিশ্বনাথ দাস মুনশী, পিংকি সাহা, কমল ঘোষ। এদিকে ‘নজরুল চেতনায় বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ এই শিরোনাম নিয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি। গতকাল শনিবার বেলা ১১ টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়েল সম্মেলন কক্ষে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান। জেলা কালচারাল অফিসার মো. হাসানুর রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রবীন শীষ ও সুব্রত বিশ্বাস দাস, শিশু সংগঠক জীবন কৃষ্ণ দে, সংস্কৃতিজন অ্যাডভোকেট এসএম ইকবাল, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. হোসেন চৌধুরী, আভাসের নির্বাহী পরিচালক রহিমা সুলতানা কাজলসহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের নেতৃবৃন্দ।