ছাত্রনেতা শহীদ খানের সম্মানে নামকরণ হচ্ছে সেতু-সড়ক-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

ছাত্রনেতা শহীদ খানের সম্মানে নামকরণ হচ্ছে সেতু-সড়ক-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

আশির দশকে দক্ষিণাঞ্চলে ছাত্ররাজনীতির অবিসংবাদিত রূপকার ছিলেন শহীদ খান। তার হাত ধরে এই অঞ্চলে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নতুন প্রাণ ফিরে পায়। না ফেরার দেশে তিনি চলে গেছেন আজ ৪৬ বছর।

কিন্তু শহীদ খানের তুখোড় নেতৃত্ব, সাংগঠনিক দক্ষতা আজও বারবার আলোচনায় চলে আসে দক্ষিণা রাজনীতিতে। কিংবদন্তী শহীদ খান শুধু ছাত্রনেতাই ছিলেন না। ছিলেন স্বাধীন মানচিতত্র প্রতিষ্ঠার অদম্য এক লড়াকু সৈনিক।
  
মহান এই মানুষটির ইতিহাস পরবর্তী প্রজন্মের কাছে অবিস্মরণীয় করে রাখতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে ছাত্রনেতা শহীদ খানের নামে তার জন্মভিটা বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায় নামকরণ করা হয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা। তাঁর নামে উপজেলার সাড়ে তিন একর জমির ওপর পাঁচতলা বিশিষ্ট নির্মিতব্য টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের নামকরণের সিদ্ধান্ত গ্রহন হয়েছে। তুলাতলী নদীর ওপর নির্মিত সেতু ও ডিসি রোড নামে পরিচিত বাকেরগঞ্জ বন্দর হতে গোবিন্দপুর বাজার পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার সড়কটিও তার নামে নামকরণ করা হয়েছে।ইতোমধ্যে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহন করেছে স্থানীয় প্রশাসন। 

বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) শহীদ খানের নামে তুলাতলী নদীর সেতু ও সড়কের নামফলক উন্মোচন করা হবে। একই সঙ্গে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করা হবে। 

শহীদ খানের অনুজ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান নব্বই দশকের ছাত্রনেতা শহীদ খানের নামে নামফলক উন্মোচন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

জানা গেছে, ১৯৫৮ সালে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ডিঙ্গারহাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন শহীদ খান। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগকে নতুন করে সংগঠিত করার কাজে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং সামরিক সরকারের নির্যাতন ও কারাভোগ করেন। তাঁর ঈর্ষনীয় সাংগঠনিক ক্ষমতা, হাস্যজ্বল ব্যক্তিত্ব ও প্রবল স্মৃতিশক্তি দিয়ে তিনি দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে প্রিয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। তাঁর নেতৃত্বে ১৯৭৯ সাল হতে দক্ষিণাঞ্চলের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এককভাবে বিজয়ী হয়। 

১৯৮১ সনে সরকারি ব্রজমোহন কলেজ নির্বাচনে তিনি নানক-হীদ প্যানেল থেকে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। নব্বই দশকের স্বৈরাচার বিরোধী গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে তিনি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্ব দেন। সমগ্র অঞ্চলের মানুষ এখনো তাকে শ্রদ্ধা ও ভালবাসার সাথে স্মরণ করে। তিনি এখনো তরুণ সমাজ ও জনগণের কাছে রাজনীতির একজন সৎ, নিষ্ঠাবান ও আদর্শ নেতা হিসেবে অনুসরণীয়। সম্ভাবনাময় গণমানুষের এই নেতা মাত্র ৪৬ বছর বয়সে দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

শহীদ খানের সহোদর সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান বলেন, শহীদ খানের স্মরণে সেতু, সড়ক ও কলেজ এর নামকরণ করায় সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ, বিশেষ করে বাকেরগঞ্জবাসী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।