ঢাকা-বরিশাল আকাশ পথে সপ্তাহে ৪ দিন ফ্লাইট বন্ধ বাংলাদেশ বিমানের

ঢাকা-বরিশাল আকাশ পথে সপ্তাহে ৪ দিন ফ্লাইট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ বিমান। আগামী ৫ আগস্ট থেকে প্রতি সপ্তাহে ৩ দিন এই রুটে ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। অপরদিকে আগামী পহেলা আগস্ট থেকে এই রুটে বেসরকারি সংস্থা নভোএয়ার সাময়িকভাবে ফ্লাইট বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
যাত্রী স্বল্পতার কারনে নভোএয়ারের ফ্লাইট বন্ধের ঘোষণা দেয়া হলেও বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইট বন্ধের কারণ হিসেবে ক্রু সংকটের কথা বলেছে।
২ বছর করোনা সংকট কাটিয়ে গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে বরিশাল-ঢাকা আকাশপথে সপ্তাহে ৭ দিন ৭৪ আসনের ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে আসছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। সুবিধাজনক সময়ে এবং তুলনামূলক কম ভাড়া হওয়ায় যাত্রী পরিবহনে সাড়া ফেলে সরকারি বিমান। যাত্রীর চাপ থাকায় সপ্তাহের প্রতিদিন ২ বার (৪ট্রিপ) বেসরকারী ইউএস বাংলা এবং সপ্তাহের প্রতিদিন ১ বার করে ফ্লাইট পরিচালনা করে আসছে নভোএয়ার। সরকারি-বেসরকারি বিমান পরিবহন সংস্থাগুলো বিগত দিনগুলো ব্যবসা সফল হলেও ঝুঁকিতে পড়েছে গত ২৬ জুন পদ্মা সেতুতে যান চলাচল উন্মুক্ত করার পর। সেতুর সুবাদে সড়ক পথে রাজধানী যাতায়াতে সময় কমে যাওয়ায় ভাটা পড়ে আকাশ পথে।
সেতু চালুর পর বরিশাল-ঢাকা আকাশ পথে গড়ে ৩৭ ভাগ যাত্রী পরিবহনের কথা জানিয়েছেন নভোএয়ার বরিশাল অফিসের মার্কেটিং অফিসার আরেফিন ইসলাম। তিনি জানান, আগে গড়ে ৫৫ ভাগ যাত্রী হতো। পদ্মা সেতু চালুর পর যাত্রী কমে যাওয়ায় ঝুঁকিতে পড়েছে বরিশাল-ঢাকার আকাশ পরিবহন। যাত্রী স্বল্পতার কারণে আগামী পহেলা আগস্ট থেকে এই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা সাময়িক বন্ধ রাখা হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে সেতুর প্রভাবে বরিশাল-ঢাকার যাত্রী কমেছে সরকারি আকাশ পরিবহনেও। বর্তমান সময়ে সপ্তাহের ৭দিন একবার করে ফ্লাইট পরিচালনা করলেও আগামী ৫ আগস্ট থেকে মাত্র ৩ দিন ফ্লাইট পরিচালনা সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। ৫ আগস্ট থেকে এই রুটে সপ্তাহের ৪ দিন ফ্লাইট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। নতুন সূচি অনুযায়ী শুক্রবার সকাল ৮টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে ও সকাল সোয়া ৯টায় বরিশাল থেকে, রবিবারও একই সময়ে উভয় প্রান্তে এবং বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে ঢাকা থেকে ও ৫টা ৫৫ মিনিটে বরিশাল থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করবে তারা। পদ্মা সেতু চালুর পর আকাশ পথে যাত্রী হ্রাস পেলেও বিমান ক্রু সংকটের কারণে তাদের ফ্লাইট বন্ধ রাখার কথাই বলছে বিমান।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বরিশাল জেলা ব্যবস্থাপক আবু আহমেদ জানান, আগে প্রায় ৭০ ভাগ আসন পূরণ হতো বিমানে। পদ্মা সেতু চালুর পর গড়ে যাত্রী হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ ভাগ। প্রতিদিন অন্তত ৬০ ভাগ আসন খালি থাকছে বর্তমানে। ৫ আগস্ট থেকে এই রুটে ৩ দিন ফ্লাইট চলবে। ভাড়াও পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। ৩৫০০ থেকে ৫০০ টাকা কমিয়ে ৩০০০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়ে ভাড়া। ক্রু সংকটের কারণে ৪ দিন ফ্লাইট সাময়িক বন্ধ থাকবে বলে তিনি জানান।
এদিকে বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স প্রতিদিন দুইবার করে বরিশাল রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। তাদেরও যাত্রীও হ্রাস পেয়েছে। তবে নতুন করে কোন সূচি পুনঃনির্ধারন করেনি তারা।
বিমানের এক কর্মকর্তা বলেন, এই রুটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ছাড়া অন্য সব কোম্পানি সার্ভিস বন্ধ হয়ে যতে পারে। উপযুক্ত সূচি এবং কম ভাড়ার কারণে বিমানের সার্ভিস টিকে যাবে বলে তারা আশা করছেন।