নির্বাচন করবেন না সিলেটের আরিফ

নির্বাচন নিয়ে অবশেষ সিদ্ধান্ত এসেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী। জানালেন আসন্ন ২১ জুন অনুষ্ঠিতব্য সিটি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না তিনি।
আজ শনিবার বিকালে নগরীর ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশ থেকে তিনি এ ঘোষণা দেন। আরিফুল হক চৌধুরী এর আগে হযরত শাহজালাল রহ. এর মাজার জিয়ারত করে নাগরিক সভায় যোগ দেন।
বিপুলসংখ্যক দলীয় নেতাকর্মী ও কর্মী সমর্থকের উপস্থিতিতে মেয়র আরিফ বলেন, বেগম খালেদা, তারেক রহমান, নগরবাসীসহ সবার মতামতের ভিত্তিতে তিনি নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না, এ কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, আমি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে বিএনপির রাজনীতি শুরু করি। আমার জীবন থাকতে এই দলের ক্ষতি হয় এমন কোন সিদ্ধান্ত নিবো না। অনেকেই আমাকে উকিল আব্দুস সাত্তার বানানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আমি সেই সুযোগ কাউকে দিতে চাই না। এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন করার পরিবেশ নেই। বিশেষ করে ইভিএম নিয়ে নগরের মানুষজন জানে না। এটা ভোট কারচুপির মহা আয়োজন। অতীতে আপনারা আমার পাশে ছিলেন। আমি কারাগারে থাকা অবস্থায় আপনারা আমর পাশে এসে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আমি সেইসব কথা ভুলতে পারিনা।
আরিফ বলেন, এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে আমার দল বিএনপি অংশ নিবে না। আমি এই সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ালাম। এসময় আরিফ নগরবাসীকে ভোট বর্জন করার আহবান জানান। আমি আপনাদের সন্তান, আমি আপনাদের ভাই। আমি মেয়র না থাকলেও আপনাদের পাশে সবসময় থাকবো। আমাকে আপনারা ক্ষমা করুন।
বিএনপি নির্বাচনে না গেলেও গত এক মাস ধরে আরিফ তার প্রার্থিতার বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখেন। ফলে সিটি নির্বাচন ঘিরে তাকে নিয়ে যে জল্পনা-কল্পনার অবসান তিনি নিজেই করবেন।
গত কয়েক দিন ধরে মেয়র আরিফ প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উত্থাপন ও দলের সিদ্ধান্তের কথা ভেবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়ে যাচ্ছেন। যদিও শুক্রবার (১৯ মে)৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দপুর জামে মসজিদে জুমার নামাজ শেষে মুসল্লিদের উদ্দেশে তার দেয়া বক্তব্যে মেয়র আরিফ নতুন করে জল্পনা উস্কে দিয়েছেন। আরিফ বলেছেন, ‘আমি সব সময় সিলেটের জনগণের পাশে ছিলাম এবং আছি। যে অবস্থানেই থাকি না কেন, প্রিয় সিলেটের জনগণের পাশেই থাকব।’
এর আগে গত ১৬ এপ্রিল যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বিষয়ে সংকেত রয়েছে এবং তা দু-চার দিনের মধ্যে জানাবেন বলে জানিয়েছিলেন আরিফুল হক। যুক্তরাজ্যে সফরকালে তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করে ওই সংকেত পান। সংকেতটি লাল, না সবুজ; অর্থাৎ নির্বাচন করবেন কিনা, তার ব্যাখ্যা দিতে এক মাস সময় চেয়ে নেন। ফলে আজ শনিবার দুপুরে রেজিস্ট্রারি মাঠের নাগরিক সমাবেশে আরিফুল কী ঘোষণা দেন, তারই প্রতিক্ষা করছেন প্রার্থী, ভোটার ও সাধারণ মানুষ।