পেছাতে পারে বিজিএমইএ নির্বাচন

পেছাতে পারে বিজিএমইএ নির্বাচন

পোশাক কারখানা মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর নির্বাচন তিন মাস পেছাতে পারে। করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ, এপ্রিলে রমজান ও মে মাসে ঈদ বোনাসসহ ব্যবসায়িক স্বার্থ বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

বুধবার সংগঠনটির সাবেক সভাপতিরা রাজধানীর একটি হোটেলে বৈঠক করবেন। সেখানেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। বিজিএমইএর এক শীর্ষ নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। যদিও বর্তমানে পর্ষদে বিরোধী দল সম্মিলিত পরিষদ চাইছে সময়মতো নির্বাচন করতে।

এ ছাড়া বর্তমান সভাপতি রুবানা হক চাইছেন বাড়তি সময়ের জন্য অন্য কেউ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করুক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সম্মিলিত পরিষদ থেকে নির্বাচিত সাবেক এক সভাপতি দেশ রূপান্তরকে বলেন, তারা নির্বাচন পেছানোর আবেদন করছে। আমরা সব দিক বিবেচনা করব। যদি দেখি এই দাবি যৌক্তিক তাহলে সর্বোচ্চ তিন মাস সময় বাড়ানো হতে পারে। এর বেশি নয়।

প্রতি দুই বছর পরপর বিজিএমইএ নির্বাচন হয়। সেই হিসাবে আগামী মার্চের শেষ সপ্তাহ অথবা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু গত রবিবার ‍ভার্চুয়াল বৈঠকে করোনার কারণে তিন থেকে ছয় মাস নির্বাচন পেছানোর বিল পাস করেন রুবানা হক। বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর আগে সাবেক সভাপতিদের মতামত গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই বৈঠকে সম্মিলিত পরিষদের উপস্থিত পরিচালকরা নির্বাচন পেছানোর বিরোধিতা করেন। রুবানা হকের প্যানেল ফোরামের কয়েকজন পরিচালকও একতরফাভাবে নির্বাচন পেছানোর পক্ষে ছিলেন না।

নির্বাচন পেছানোর বিষয়ে বিজিএমইএর সহসভাপতি (অর্থ) এম এ রহিম গত সোমবার বলেন, করোনার ভয়ে আমরা নির্বাচন পেছাতে চাচ্ছি না। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী করোনার সেকেন্ড ওয়েভ চলছে। আগামী এপ্রিলে রোজা। এরপর দুটি ঈদ। আর ঈদে তো বোনাসের বিষয় আছে। এখন যদি মার্চে নির্বাচন হয় সেক্ষেত্রে জানুয়ারি থেকেই আমাদের নির্বাচনের পেছনে ছুটতে হবে। তাতে বেতন-ভাতা নিয়ে জটিলতা দেখা দিতে পারে। তখন শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিতে পারে। তাই আমরা সাবেক সভাপতিদের কাছে ঈদের পরে নির্বাচন করার জন্য বলেছি। বর্ধিত সময়ে রুবানা হক সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন নাও করতে পারেন।

তবে নির্বাচন পেছানোর কোনো যৌক্তিকতা দেখছেন না সম্মিলিত পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ কাদের মনা। তিনি গতকাল মঙ্গলবার  বলেন, বর্তমান পর্ষদ সমঝোতার পর্ষদ। রুবানা হকের সভাপতি হওয়া না হওয়া কোনো বিষয় এখানে নয়। ফোরাম একতরফাভাবে ভোট পেছানোর বিল পাস করেছে। সবকিছুই তারা একতরফাভাবে করেছে। আমরা চাই সময়মতো নির্বাচন। তারপরও সাবেক সভাপতিরা যদি মনে করেন শিল্পের স্বার্থে মেয়াদ বাড়ানোর প্রয়োজন তাহলে বাড়াতে পারেন। আরেকটা বিষয় সবার জানা উচিত, করোনাকালে আমরা যা কিছু পেয়েছি তা সরকার নিজ ইচ্ছাতেই দিয়েছে। এজন্য কাউকে কিছু চাইতে হয়নি। এর ক্রেডিট কেউ নিতে পারবেন না।

বিজিএমইএ বায়োমেট্রিক ভোটার কার্ড করতে চাইছে। এজন্য সময়ের প্রয়োজন পড়লে তাতে আপত্তি কেন জানতে চাইলে ফতুল্লা অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক ফজলে শামীম এহসান বলেন, এখানে সব সদস্য একে অন্যকে চেনেন। বায়োমেট্রিকের তেমন প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেসব কারখানা এখন আর চালু নেই তাদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া। এটা করতে পারলে অন্তত ২০০ ভোটার বাদ পড়বেন বলে সাধারণ সদস্যরা মনে করছেন। যদি তিন মাস সময় বাড়ানো হয় তাহলে এই সময়ে তারা ভোটার তালিকা সংশোধন করতে পারেন।