প্রতিদিন এমন হোক মেয়র সাদিক

রাজনৈতিক নেতাদের চলন, বলনে সাধারণ নাগরিকদের আগ্রহ সব সময়ই একটু বেশি থাকে। তা জনপ্রতিনিধিরা মাঠে থাকা বা না থাকা, হোক নেতিবাচক কর্ম বা ইতিবাচক। তাতে নাগরিকদের কিছু যায় আসেনা। তারা চায় জনপ্রতিনিধিরা মাঠে থাকুক।
বরিশালে রাজনৈতিক ধরনটা একটু ভিন্ন। জনপ্রতিনিধিরা নাগরিকদের পাশ থাকবে, কথা বলবে, শুনবে এমন আগ্রহ। সে আগ্রহে রাজনৈতিক নেতৃত্বরা কখনো কখনো সায় দিয়ে পাশে থাকার চেষ্টা করেন। জনপ্রতিনিধি হিসেবে বরিশাল সিটির মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বেশ কিছু অনন্য উদাহরণ নগরবাসীকে আকৃষ্ট করে। রাত দিন তার চমৎকার ঘটনা প্রায়ই দেখা যায়।
আজকের শিরোনাম ‘গুড ডে’ এর কথায় আসি, দুপুর ১ টার দিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের ফেসবুক পেজ থেকে একটি লাইভ চলছিল। লাইভে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বরিশাল নগরীর বিভিন্ন খাল পরিষ্কার ও পুনঃখনন কার্যক্রম পরিদর্শন করছেন। মেয়র নগরের কালুসাহ সড়কে দেখতে যান, কেমন চলছে খাল পরিষ্কার কার্যক্রম অভিযান।
বৃহস্পতিবার ৬ মে কাজ পরিদর্শনের সময় খালের পাড়ে হাঁটতে শুরু করেন মেয়র সাদিক। এসময় খালপাড়ের বাড়িগুলোর সংযুক্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা দেখতে দেখতে বিভিন্ন ঘর বাড়ির পিছনে চলে যান। এমন সব জাগায় তিনি চলতে থাকেন, খুঁজতে থাকেন ড্রেনেজ ব্যবস্থা, ওইসব স্থানে সচারাচর কেউ যায় না। দেখা যায় ঘর বাড়ির পিছনে ড্রেনের ওপর দেয়ালের ওপর, বর্জ্রের ওপর দিয়ে তিনি চলছেন। ঘর বাড়ির মানুষগুলোও টের পায়নি এই নগরীর অভিভাবক তার ঘর বাড়ির আসে পাশে হাঁটছেন।
ততোক্ষণে বরিশাল সিটি করপোরেশনের ফেসবুক পেজে যুক্ত হয়েছেন প্রায় হাজার খানেক ফেসবুকবন্ধু, চলে লাইক, কমেন্ট। কোথায়, কি করছেন বিসিসির মেয়র সাদিক। মেয়র নিজেও জানেন না কোথায় বেড়োনোর পথ। কোন কোন বাসায় রান্না চলছে, ওই বাড়িতে গিয়ে মেয়র জিজ্ঞেস করছেন ড্রেনের পথ কোথায়। কিছুক্ষণ পর ওই এলাকার মানুষ টের পেয়েছে তার এলাকায় মেয়র হাজির, ভীড় জমায় মেয়রের বহরে। সামনে এসে বলতে থাকেন বিভিন্ন সমস্যার কথা।
অলি গলিতে ঘুরে মেয়র বের হন প্রধান সড়ক সি এন্ড বি রোডে। ততক্ষণে মেয়র সাদিকের সাদা ধবধবে পাঞ্জাবি ঘামে ভিজে এপ্রোন অবদি। তারপর আবারও একটা তিন তলা বাড়ির বাইরের সিড়ি বেয়ে, বাঁশের সিড়ি বেয়ে মেয়র সাদিক বাড়ির ছাদে, আবার বিল্ডিংয়ের সিঁড়ি বেয়ে ছাদে। ছাদ থেকে দেখছেন কিভাবে বের হয়ে আছে ড্রেন, সঙ্গে সঙ্গে নির্দেশনা দিচ্ছেন সিটি করপোরেশনের কর্তাদের। ছাদ থেকে নিচে নেমে কথা বলেন সংশ্লিষ্ট এলাকার নাগরিকদের সাথে। এরপর খালপাড়ে খনন কর্মে ব্যবহত বুলডোজার নিজে চালিয়ে ১৫ মিনিট খনন করেন। মেয়রকে সামনে পেয়ে যেমন সমস্যার কথা বলছেন, তেমনি সাদুবাদও জানিয়েছেন অনেকে।
এমন সময়ে ফেসবুক শত শত মন্তব্যে চলতে থাকে। ওই লাইভে ওহেদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির মন্তব্য ঞযধহশ ুড়ঁ ভড়ৎ ড়িৎশরহম ফধু ধহফ হরমযঃ মেয়র । অর্থাৎ দিন রাত্রি উন্নয়নের কাজ করার জন্য ধন্যবাদ। হ্যা, মেয়রের এমন কাজকে ওনার ‘গুড ডে’, হিসেবে স্বীকৃত আমারও নজর কাড়ে। নিঃসন্দেহে অসংখ্য নগরবাসীর চোখের সামনে এসেছে বিষয়টি।
মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ গতকাল বৃহস্পতিবার ৬ মে নগরীতে কাজের সকালটা শুরু করেছেন বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর পূর্ব তীরে কর্নকাঠী এলাকায় ১০ একর জমির উপর ১২২ কোটি টাকা ব্যয়ে মেরিন একাডেমির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের এরপরই মেয়র আসেন কালুসাহ সড়ক সিএ-বি রোড এলাকায়। এক ঘন্টার বেশি সময় পুরো এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা দেখে তার সমাধানের নির্দেশনা দেন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ।
মেয়র সাদিকের এমন দিনটায় ওহেদুল ইসলামের মতো অনেকেই খুশি। তার ইতিবাচক মন্তব্য গুলো দেখেই বুঝা যায়। আসলে সাধারণ মানুষ সব সময় জনপ্রতিনিধিদের এভাবেই পাশে পেতে চায়। প্রতিদিন জনপ্রতিনিধিরা এমন ‘গুড ডে’ দিক। গতকালকের ‘গুড ডে’ অনেকের জন্য আশা সঞ্চারিত করেছে। বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর এমন ডে ওয়ার্ক বিসিসির ফেসবুক পেজে ৭ ঘন্টায় প্রায় দেড় লাখ মানুষ দেখেছে, মন্তব্য করেছেন, লাইক দিয়েছেন, শেয়ারও করেছেন। নগরীর অভিভাবক এমন ‘গুড ডে’ প্রতিদিন হোক। প্রতিদিন এমন ডে পেলে বরিশাল সিটি প্রতিদিন ‘গুড ডে’ পাবে, আর আমরা প্রতিদিন মেয়রকে জানাবো ধন্যবাদ।