বরিশালে করোনার উপসর্গ নিয়ে শিশুর মৃত্যু,দাফনে বাধা

বরিশাল নগরীর ১২ নম্বর ওয়ার্ডের আমবাগান এলাকায় করোনা উপসর্গ নিয়ে হতদরিদ্র পরিবারের দেড় বছরের এক শিশু মৃত্যুর পর ৩ ঘণ্টায়ও এগিয়ে আসেনি কোনো প্রতিবেশী। শিশুটির প্রতিবন্ধী বাবাসহ অন্যান্যরা সন্তানের লাশের পাশে কান্নাকাটি করতে থাকলে শনিবার বিকাল ৫টার দিকে পুলিশ শিশুটির লাশ দাফন করতে যায়।
পরে পুলিশের কঠোর পদক্ষেপে স্থানীয়রা পিছুু হটলে লাশ দাফন করা হয়। দাফনের আগে শিশুটি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিল কিনা তা নিশ্চিত হতে নমুনা সংগ্রহ করে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি দল।
আমবাগানের একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের পরিত্যক্ত জমিতে খুপড়ি ঘর প্রতিবন্ধী সবুজ হাওলাদার স্বপরিবারে বসবাস করেন। পেশায় তিনি ভিক্ষুক। তার দেড় বছর বয়সের সন্তান শাহাদত শনিবার সকাল ১০টার দিকে মারা যায়।
সবুজ হাওলাদার জানান, তার দেড় বছর বয়সের ছেলে শাহাদত গত কয়েকদিন ধরে জ্বর-সর্দি-কাশিতে ভুগছিল। স্থানীয় এক চিকিৎসকের পরমর্শে বাসায় রেখে তার চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। শনিবার সকাল ১০টার দিকে সন্তানের সাড়া শব্দ না পেয়ে তিনিসহ পরিবারের সদস্যরা কান্নাকাটি করতে থাকে। এ সময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলেও তারা কেউ ঘরে না ঢুকে দূর থেকে উকি দিয়ে চলে যায়।
কোতয়ালী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরাফাত হাসান জানান, অমানবিক এই ঘটনাটি স্থানীয় এক ব্যক্তি কোতায়ালী থানায় অবহিত করে। খবর পেয়ে দুপুর ১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে তারা নিরাপত্তা পোশাকসহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক প্রস্ততি সেরে বিকেল ৩টার দিকে লাশ উদ্ধার করেন। মরদেহের গোসল শেষে বিকেল ৫টার দিকে তার জানাজা সম্পন্ন হয়। স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম ওই শিশুটির জানাজা পড়াতে রাজি না হওয়ায় তাকে অনেকটা জোরপূর্বক জানাযা পড়াতে বাধ্য করা হয়।
সামাজিক দূরত্ব রেখে ৫/৬ জন জানাজায় অংশ নেন। পরিবারের ইচ্ছায় দাফনের জন্য সদর উপজেলার তাজকাঠী গ্রামে তার লাশ নিয়ে যাওয়া হয়। তখন স্থানীয় কিছু লোকজন সেখানে দাফনে বাধা দেয়ার চেষ্টা করে। এ অবস্থায় পুলিশ কঠোর অবস্থানে গেলে স্থানীয়রা পিছু হটে এবং লাশ দাফন করা হয়।