মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মদ বিক্রির ছবিতোলায় সাংবাদিককে মারধর

মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মদ বিক্রির ছবিতোলায় সাংবাদিককে মারধর

বরিশালে করোনা এড়াতে নগরীরসহ জেলাব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করা হলেও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ে শতাধিক ক্রেতা সমাগম করে খুচরা মূল্যে মদ বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ তুলতে গেলে বেসরকারি একটি টেলিভিশনের ক্যামেরাপার্সনকে মারধর করে অবরুদ্ধ করে রাখে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কতিপয় কর্মচারী

বরিশালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ে প্রায়ই খুচরা মূল্যে লিটার প্রতি ৫০০ টাকা দরে দেশীয় মদ বিক্রি হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। যার সরকারি মূল্য ৮৮ টাকা। শনিবার শতাধিক লাইসেন্সবিহীন ব্যক্তির কাছে অবৈধভাবে মদ বিক্রির খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে গোপনে ভিডিও ধারন করছিলেন বেসরকারি বাংলাভিশন টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান কামাল হোসেন। এ সময় কামাল হোসনকে মারধর করে ক্যামেরা ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয় ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী মো. হাসিব,  মো. রোকন ও মো. রাজিব। খবর পেয়ে অন্যান্য সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। 

জানা গেছে, লকডাউন উপেক্ষা করে লাইসেন্স বিহীন লোকজনদের কাছে মদ বিক্রির অভিযোগ পেয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তের যায় মিডিয়া কর্মীরা। এসময় হঠাৎ করে বাংলা ভিশনের ক্যামেরা পার্সন কামাল হাওলাদারকে ভিডিও করার কারন জানতে চেয়ে তাকে টেনে হিচড়ে একটি কক্ষের মধ্যে নিয়ে যায় এবং তাকে মারধর করে। এসময় তার ক্যামেরা ও মোবাইল ফোনও ভাঙচুর করা হয়।

এ সময় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ওয়্যারলেস অপারেটর মো. হাসিব নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। 


এদিকে অনেক লোক সমাগমের খবরে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ে অভিযান চালায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলাম। র‌্যাবের উপস্থিতিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে এক কনটেইনার মদ ফেলে দেয়া হয়। এছাড়া ১৮০ লিটার মদ অধিদপ্তরের একটি কক্ষে আটকে সিলগালা করে দেয় ভ্রাম্যমান আদালত। 


এ সময় ভ্রাম্যমান আদালত ওই কার্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষে লুকিয়ে থাকা মদের খুঁচরা ক্রেতাদের খুঁজে বের করেন।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলাম জানান, অভিযুক্তদের সরাসরি শাস্তির আওতায় আনার ক্ষমতা নেই তার। তাই বিষয়টি ঢাকায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে লিখিতভাবে জানানো হচ্ছে। তারা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবেন।


অপরদিকে ওই প্রতিষ্ঠানের বিভাগীয় প্রধান মো. হাফিজুর রহমান অফিস ভবনের চতুর্থ তলায় বসবাস করলেও তিনি এর কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন। তবে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন তিনি।

শনিবার সকালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। তবে এখন পর্যন্ত সেখানকার স্টাফদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলা ভিশনের বরিশাল স্টাফ রিপোর্টার শাহিন