বরিশালে ১৫ ঘণ্টার ব্যাবধানে করোনা ওয়ার্ডে ২ রোগীর মৃত্যু

বরিশালে ১৫ ঘণ্টার ব্যাবধানে করোনা ওয়ার্ডে ২ রোগীর মৃত্যু



বরিশালে ১৫ ঘণ্টার ব্যাবধানে করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন দুই জনের মৃত্যু হয়েয়েছে। দুজন-ই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। একজন গতকাল শুক্রবার ভোর রাত সাড়ে ৩টার দিকে আর অন্যজন শুক্রবার সন্ধ্যায় মারা যান। মৃত দুই ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে এক করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ায় পুরো বিভাগ লকডাউন করা হয়েছে। বিভাগের চিকিৎসক-নার্সদের করেন্টাইনের পাঠানো হয়েছে।


 শুক্রবার ভোর রাত সাড়ে তিনটায় ৪০ বছর বয়সী একজন এবং সন্ধ্যায় ৭২ বছর বয়সী বৃদ্ধের মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা: বাকির হোসেন। একই সঙ্গে তিনি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগ লকডাউন ও চিকিৎসক-নার্সদের করেন্টাইনে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


জানা গেছে, ৭২ বছর বয়সের বৃদ্ধা বরগুনার বেতাগী উপজেলার ফুলতলা এলাকার এই বাসিন্দা শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হয়। করোনার উপসর্গ নিয়ে এই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকদের ধারণা। মৃত ওই ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার পর তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কি না নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানান ডা: বাকির হোসেন।
এদিকে শুক্রবার ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ৪০ বছর বয়সের এক রোগী মারা গেছে। এছাড়া হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ায় পুরো ওয়ার্ড লকডাউন করা হয়েছে। ওয়ার্ডের চিকিৎসক ও নার্সদের করেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।


বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন জানান, গত ১৫ এপ্রিল দুপুরে ৪০ বছর বয়সী এক রোগী হাসপাতালের নারী মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। তার বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়ায়। পরে তার মধ্যে করোনা উপসর্গ লক্ষ্য করায় তাকে ১৬ এপ্রিল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়। গতকাল শুক্রবার ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তার নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের আরটি-পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে নিরাপত্তা সহকারে তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।


এদিকে করোনা আক্রান্ত এক ব্যক্তি তথ্য গোপন করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে এক রোগী ভর্তি হওয়ায় পুরো ওয়ার্ড লকডাউন এবং ওই ইউনিটের চিকিৎসক নার্সসহ ২৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। 
হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন বলেন, স্বজনরা সর্দি কাশির তথ্য গোপন করায় গত ১৩ এপ্রিল হাসপাতালে আসা এক রোগীকে জরুরী বিভাগ থেকে মেডিসিন ওয়ার্ডে প্রেরণ করা হয়। গত বুধবার (১৫ এপ্রিল) তার এক্স-রে রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকদের সন্দেহ হয় এবং রোগীকে তাৎক্ষণিক হাসপাতালের করোনা ইউনিটের আইসোলেশনে পাঠায়। গত বৃহস্পতিবার রাতে তার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে পজেটিভ পাওয়া যায়। এরপর পরই হাসপাতালের পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ড সাময়িক লকডাউন এবং ওয়ার্ডে দায়িত্বপালনকারী চিকিৎসক, নার্স সহ ২৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়।


এ নিয়ে  পর্যন্ত বরিশাল জেলায় চিকিৎসক, নার্স ও স্বা¯’্য কর্মীসহ মোট করোন আক্রান্তের সংখ্যা ১৫জন। এ ছাড়া জেলার মুলাদীর নিজ বাড়িতে গত সোমবার জ¦র-সর্দি-কাঁশি নিয়ে মারা যাওয়া এক সন্দেহভাজন ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট গত বুধবার পজেটিভ হয়।


হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন জানান, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২০ জন রোগী আছেন। যার মধ্যে সাতজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।