বরিশালে কিশোরীকে তিন মাস আটক রেখে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার এক

বরিশালে এক কিশোরী (১৫) কে অপহরণ করে তিন মাস আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ধর্ষণে সহযাগিতার দায়ে আকলিমা বেগম (৫৫) নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। গত বৃহষ্পতিবার আগৈলধারা থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ ধর্ষণে সহযোগিতাকারী আকলিমা বেগমকে আটক করে।
শুক্রবার কিশোরীর দায়ের করা অভিযোগ মামলা হিসেবে গ্রহণ করে পুলিশ। এরপর ওই মামলায় আকলিমা বেগমকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ১৬ মার্চ বরিশাল জেলার আগৈলঝারা উপজেলার রতœপুর গ্রামের অনাথ কিশোরীকে অপহরণের পর পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলায় নিয়ে আটকে রেখে ধর্ষণ করে সহিদ শেখ (৪০)। অপহরণে সহযোগিতা করে কিশোরীর কথিত ফুপু আকলিমা বেগম।
এদিকে গতকাল শুক্রবার ধর্ষণের শিকার কিশোরীর ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার রতœপুর গ্রামের কিশোরী (১৫) তার মা মারা গেলে ছোট বোন নিয়ে দাদার পরিবারে আশ্রিত ছিল। কিশোরীর বাবা ঢাকায় কাজ করতেন। দাদা-দাদী মারা যাবার পরে তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে ঢাকায় বসবাস শুরু করেন। অনাথ ওই কিশোরী ও তার ছোট বোনকে বাড়িতে থাকা সম্পর্কের (কথিত) ফুফু সাহেদ শেখ এর স্ত্রী আকলিমা বেগম (৫৫) কে দেখা-শোনার জন্য বলেন। বাড়িতে আকলিমার ভাসুর সহিদ শেখ (৪০) ওরফে সুমনসহ পরিবারের অন্যান্য স্বজনের যাতায়াতের সুবাদে কিশোরীর সঙ্গে তাদের পরিচয় ছিলো। এরপর গত ১৬ মার্চ থেকে কিশোরী নিখোঁজ হয়। পরে জানা যায় তাকে অপহরণ করে আটকে রাখা হয়েছে।
আগৈলঝারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আফজাল হোসেন জানান, কিশোরীর সঙ্গে পরিচয়ের সুত্র ধরে গত ১৬ মার্চ সন্ধ্যায় সহিদ শেখ মোবাইল ফোনে কিশোরীকে বাড়ির পাশে রাস্তার উপর তার সঙ্গে দেখা করতে বলে। ফুপুর ভাসুর হওয়ায় কিশোরী সহিদ শেখ এর সঙ্গে দেখা করতে যায়। এসময় পরিকল্পিতভাবে পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর থানার মাটিভাঙ্গা গ্রামের সহিদ শেখ ওরফে সুমন, একই থানার মাহমুদকান্দি গ্রামের সরোয়ার ফরাজীর ছেলে রেজাউল ফরাজী, আকলিমা বেগমসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩জন মিলে জোর করে কিশোরীকে অপহরণ করে মোটরসাইকেলে করে পিরোজপুর নিয়ে সহিদ শেখের বাড়িতে আটকে রাখে। সেখানে কিশোরীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে সহিদ শেখ। এরপর তিন মাস আটকে রেখে পালক্রমে ধর্ষণ করে। কৌশলে কিশোরী সেখান থেকে পালিয়ে বাড়ি চলে আসে। গত বৃহস্পতিবার ঘটনার বর্নণা দিয়ে ধর্ষকসহ তাদের সহযোগী চার জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। পরে অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তৈয়বুর রহমান জানান, অভিযোগ পেয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে ধর্ষণে সহায়তাকারী ধর্ষিতার কথিত ফুপু আকলিমা বেগমকে আটক করা হয়। অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় সহায়তাকারী হিসেবে আকলিমাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল শুক্রবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। ধর্ষণের শিকার কিশোরীর ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপতালে পাঠানো হয়েছে।