বাবুগঞ্জে বোমা ফাটিয়ে প্রবাসীর বিয়ে বাড়ি লুটপাট

বাবুগঞ্জে বোমা ফাটিয়ে প্রবাসীর বিয়ে বাড়ি লুটপাট

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় ফিল্মি স্টাইলে রাতের আঁধারে ককটেল বোমা ফাটিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বিয়ে বাড়ির বিপুল পরিমান স্বর্নালংকার, নগদ অর্থ ও ৭ টি মোবাইল ফোন লুটে নিয়েছে একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল। ঘটনাটি ঘটেছে ৩ ডিসেম্বর দিবাগত রাত সারে ৩ টার দিকে উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের পূর্ব ভূতেরদিয়া গ্রামের সন্ধ্যা নদীর তীরবর্তী মুজিবুর রহমান খানের বাড়িতে। 

প্রতক্ষদর্শীরা জানায়, ১৮-২০ জনের মুখোশধারী একটি ডাকাতদল স্পীডবোটযোগে আগ্নেয় ও ধারালো অস্ত্রসহ বাড়িতে ঢুকে সবাইকে জিম্মি করে স্বর্নালংকার, নগদ অর্থ,মোবাইল ফোন ও প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র লুটে নিয়ে নদী পথে চলে যায়। ডাকচিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে আসলে ডাকাত দলের সদস্যরা ককটেল বোমা ফাটিয়ে আত্মঙ্ক সৃষ্টি করে। 

মুজিবুর রহমান বলেন, আমার বড় ছেলে রাসেল খান গত ৫ বছর মালায়শিয়ায় প্রবাস জীবন শেষ করে বাড়িতে আসে। গত শুক্রবার মধ্য ভূতেরদিয়া আবুল বাষার সিকদারের মেয়ে রুবিনা আক্তারের সাথে রাসেলের বিয়ে হয়। ওই দিন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা বউ উঠিয়ে আনি। রবিবার আমাদের বাড়িতে বউ ভাতের আয়োজন উপলক্ষে আমরা সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করি। এর আগের রাতেই ডাকাত দল এসে সব কেড়ে নিয়ে যায়। আমাদের সারা জীবনের কষ্টে অর্জিত সম্পদ লুটে নিয়ে যায় তারা। 

বর রাসেলের বোন রেবুর বান্ধবী আসমা আক্তার তার স্বামী সন্তান নিয়ে বেড়াতে এসে সাথে থাকা স্বার্নালংকার ও নগদ অর্থ খুইয়েছেন। তিনি বলেন, আমাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে ডাকাত দল ব্যাগে থাকা ১০ হাজার টাকা, একজোড়া হাতের রুলি ও আংটি খুলে নিয়ে যায়। এভাবে ঘরে থাকা সকলের স্বর্ন ও মোবাইল নিয়ে যায় তারা। 
বর রাসেল বলেন, আমার লকারে রাখা প্রায় ৫ লাখ টাকা ও কনের, বোনের মায়ের,আত্মীয় স্বজনসহ সব মিলিয়ে ২০ ভরি স্বর্নের গহনা লুটে নিয়েছে ডাকাত দল।  

বাবুগঞ্জ থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, ঘটনা শুনে সিআইডি ও পুলিশে উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আমরা এই ঘটনার সাথে জড়িতদের সনাক্তকরণে কাজ করে যাচ্ছি। এ ব্যাপারে থানায় এখনও কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। 

অন্যদিকে একই রাতে উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর বন্দরে পাঁচটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। জানাযায়, ২টার দিকে হঠাৎ ডাকাত চক্ররা নৈশ প্রহরী মন্টু ও কয়েকজন পথচারী ও ফুটবল প্রেমীসহ ৩৫ জনকে ক্লাবে আটকে রেখে ৩টি জুয়েলার্সের দোকান ও একটি ফার্মেসি এবং ব্যাংক এশিয়ার তালা ভেঙ্গে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়।  

শিকারপুর বন্দর বণিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিল মাহমুদ বাচ্চু জানান, একটি স্পিডবোট ও ট্রলার নিয়ে ৩০/৩৫ জনের একটি ডাকাত দল রাত আড়াইটার দিকে বন্দরে হানা দেয়। বিভিন্ন আগ্নেয় ও ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত ডাকাত দল বন্দরে প্রবেশ করে। পরে নিরাপত্তা প্রহরী ও পথচারী অন্তত ৩০ জনকে বন্দরে বেঁধে রাখে।  

তারপর অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে তালা কেটে ডাকাতরা ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান, কনিকা, রিয়া ও আহম্মেদ জুয়েলার্সে প্রবেশ করে  মালামাল এবং স্বর্নালংকার লুট করেছে ‍। এছাড়া আলমদিনা ফার্মেসী থেকে নগদ ২ লাখ টাকা ও বিপুল পরিমাণের ওষুধ নিয়ে যায় বলে নিশ্চিত করেছেন ফার্মেসি মালিক বাবুল হোসেন। 

তিনি আরো বলেন, পরে বন্দরের রুপালী ব্যাংকের শাখায় হানা দেয়। তখন ব্যাংকের মধ্যে থাকা নিরাপত্তা প্রহরী মিরাজ ডাক চিৎকার দিলে বাজারের আশে-পাশের লোকজন এসে পড়লে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।

ডাকাতরা কনিকা জুয়েলার্স থেকে ২/৩ ভরি স্বর্নালংকার ও নগদ দেড় লাখ টাকা, রিয়া জুয়েলার্স থেকে দেড় থেকে দুই ভরি ওজনের স্বর্নালংকার ও ১২ ভরি রুপার অলংকার ও আহম্মেদ জুয়েলার্স থেকে এক ভরির মতো স্বর্নালংকার, ৮০ ভরি রুপার তৈরি অলংকার ও নগদ ৪০ হাজার টাকা লুট করেছে।

উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল হাসান বলেন, প্রহরীদের বেঁধে চোর চুরি করেছে। মোট ২/৩ ভরি স্বর্নালংকার চুরি করেছে।